ঢাকা শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

‘হজ্ব ম্যানেজ্বমেন্ট সেন্টার’ চালুর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

‘হজ্ব ম্যানেজ্বমেন্ট সেন্টার’ চালুর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

হজ্বযাত্রাকে সহজ্ব, সুন্দর ও নিরাপদ করতে ‘হজ্ব ম্যানেজ্বমেন্ট সেন্টার’ চালু করে হজ্বযাত্রীদের সার্বক্ষণিক সেবার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় হজ্ব ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভায় এ নির্দেশ দেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পবিত্র হজ্ব পালন সহজ্ব করার জ্বন্য মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে একটা সুযোগ দিয়েছেন। এই সুযোগ যেন আমরা সর্বোচ্চ কাজে লাগাই। একজ্বন হজ্বযাত্রীও যেন কোনও ধরনের ভোগান্তির শিকার না হন, সে প্রচেষ্টা থাকতে হবে।’

দেশে লাইসেন্স প্রাপ্ত হজ্ব এজেন্সির সংখ্যা ১২৭৫টি। এর মধ্যে হজ্ব কার্যক্রমের জ্বন্য যোগ্য এজেন্সি ৯৪১টি, হজ্বযাত্রী নিবন্ধনকারী এজেন্সি ৭৫৩টি এবং লিড এজেন্সি ৭০টি।

এই এজেন্সিগুলোর দায়িত্ব কী হবে সেটা সুস্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ করে বুকলেট আকারে ও অনলাইনে প্রকাশের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘সরকারের দায়িত্ব হলো- এজেন্সিগুলোর দায়িত্ব পালন যেন সঠিকভাবে হয় তা নিশ্চিত করা। দায়িত্ব পালন না করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। পুরো হজ্ব প্রক্রিয়া হতে হবে সহজ্ব ও স্পষ্ট। সরকারের দায়িত্ব কী, এজেন্সির দায়িত্ব কী— এসব সুস্পষ্টভাবে লিখিত থাকতে হবে।’

‘কেউ হারিয়ে গেলে, অসুস্থ হয়ে পড়লে, লাগেজ্ব হারিয়ে গেলে বা অন্য কোনও ধরনের সমস্যায় করণীয় কী, কাকে জানাবে এটার সুস্পষ্ট গাইডলাইন থাকতে হবে। হজ্বযাত্রীদের প্রত্যেকের কাছে এই বুকলেট দিতে হবে। নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে পদক্ষেপ কী নেওয়া হবে, সেটাও উল্লেখ থাকতে হবে,’ বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘দেশেই একটি হজ্ব ম্যানেজ্বমেন্ট সেন্টার স্থাপন করতে হবে- যাতে করে বাংলাদেশ বসেই সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের মাধ্যমে সেবা নিশ্চিত করা যায়।’ ‘কল সেন্টারে যেসব অভিযোগ আসবে, সেগুলো এখান থেকে যেন সঙ্গে সঙ্গে মনিটরিং করা যায়। একটি ওয়েবসাইট করে দিতে হবে- যেখানের হজ্বযাত্রীরা সবাই যুক্ত থাকবেন। তারা তাদের অভিযোগ জানাতে পারবেন; কেউ হারিয়ে গেলে সেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তার লোকেশন খুঁজে পাওয়া যাবে,’ বলেন তিনি। ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনা ঠিক করার জ্বন্য কলসেন্টারে কী ধরনের অভিযোগ আসছে, সেগুলো মনিটরিং করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ‘কী ধরনের অভিযোগ আসছে সেগুলো লিপিবদ্ধ করে ফেলতে হবে। এর মধ্যে কতগুলো সুরাহা হলো, কতগুলো হলো না, সে তথ্য থাকতে হবে। এই অভিযোগগুলো যেন পরের বছর না আসে, সেজ্বন্য আলোচনা করে সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে।’ একইসঙ্গে, কোনও এজেন্সি দায়িত্ব পালন না করলে তার লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। ‘হজ্বযাত্রীদের অভিজ্ঞতা থেকে এজেন্সিগুলো রিভিউ করতে হবে। এজেন্সির প্রশিক্ষণ আছে কিনা সেটা মনিটরিং করতে হবে। কর্মীদের প্রশিক্ষণের ভিত্তিতে এজেন্সিগুলোতে ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ ও ‘ডি’ ক্যাটাগরি করে ফেলতে হবে। এই ক্যাটাগরির মান পূরণে যে এজেন্সিগুলো ব্যর্থ হবে, তাদের লাইসেন্স বাতিল করে দেবেন,’ বলেন তিনি। হজ্বযাত্রীরা যেন যেকোনও পরিস্থিতিতে নিজেদের করণীয় সম্পর্কে অবগত থাকতে পারেন এবং কেউ যাতে বিভ্রান্ত না হন, সেজ্বন্য বিষয়ভিত্তিক ভিডিও তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘প্রবলেম সলভিং ভিডিও হতে হবে। অসুস্থ হয়ে পড়লে, হারিয়ে গেলে, কোরবানি দিতে গিয়ে কোনও সমস্যা হলে— করণীয় কী এমন ভিডিও যাত্রীদের দেখিয়ে দিলে তারা মনোবল পাবেন। প্রস্তুত থাকতে পারবেন।’ এছাড়া, পরের বছর থেকে হজ্ব ক্রেডিট কার্ড চালু ও লাগেজ্ব ব্যবস্থাপনার জ্বন্য ট্যাগ কপি করে তালিকা করে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘হজ্ব ক্রেডিট কার্ড চালু করে দিলে হজ্বযাত্রীদের ভোগান্তি কমে যাবে। দেশে ফেরার পর যে কার্ডে যে অর্থ থেকে যাবে, সেটা নগদ ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে। লাগেজ্ব হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। সেজ্বন্য চেক-ইনের পরে ট্যাগটা কপি করে রাখা যেতে পারে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত