ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

কুষ্টিয়ায় মাছ চাষে বদলে গেছে গ্রামীণ অর্থনীতি

কুষ্টিয়ায় মাছ চাষে বদলে গেছে গ্রামীণ অর্থনীতি

কুষ্টিয়ায় দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পায়েছেন মৎস্যচাষিরা। এর ফলে বদলে গেছে গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা। আমিষের চাহিদা পূরণে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে কুষ্টিয়ার সুস্বাদু বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। মছ চাষ করে অনেক বেকার যুবক এখন স্বাবলম্বী। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে কুষ্টিয়ার মাছ চাষ হতে পারে দেশের অন্যতম অর্থনৈতিক খাত।

গতকাল শনিবার কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পুকুর, খাল, বিল ও জলাশয়ে মাছ চাষে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। কৃষি কাজের পাশাপাশি কৃষকরা নিজ বাড়ির আঙিনায় পুকুর কেটে অথবা জলাশয় লিজ নিয়ে মাছ চাষ করে তারা এখন স্বাবলম্বী। শুধু কৃষকই নন অসংখ্য বেকার যুবক মাছ চাষ করে গ্রামীণ অর্থনীতির চাকাও করেছেন সচল। এরফলে বদলে গেছে গ্রামীণ অর্থনীতি চিত্র। বিভিন্ন প্রজাতির শত শত মণ মাছ প্রতিদিন স্থানীয় বাজারে সরবরাহের পাশাপাশি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে সহজ শর্তে সরকারি ঋণ সুবিধা পেলে এই খাতকে আরও সম্প্রসারিত ও সমৃদ্ধ করা সম্ভব বলে মৎস্যচাষিদের দাবি।

কুষ্টিয়ার কুমারখারী উপজেলার তারাপুর গ্রামের একসময়ের বেকার যুবক সুজন আলী। বেকারত্ব দূর করতে প্রায় একযুগ আগে মাত্র ৩ বিঘা জমির পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন। এখন তার সেই পুকুর ২৬ বিঘায় পরিণত হয়েছে। মেধা আর শ্রম দিয়ে মাছ চাষ করে হয়েছেন স্বাবলম্বী। তার মৎস্য খামারের রুই, কাতল, মৃগেলসহ বিভিন্ন প্রজাতির শত শত মন মাছ প্রতিদিন স্থানীয় বাজারে সরবরাহের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। অনেকের বেকারত্ব দূর করে তাদেরও করেছেন স্বাবলম্বী। সহজ শর্তে সরকারী ঋণ পেলে এই খাতকে আরও সম্প্রসারিত করা সম্ভব বলে জানান সুজন আলী।

সুজন আলীর দেখাদেখি এলাকার অনেকেই মাছ চাষ করে বেকারত্ব দূর করে হয়েছেন স্বাবলম্বী। তাদেরও দাবি এ খাত সম্প্রসারিত করতে প্রয়োজন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার। এর পাশাপাশি পুকুর বা জলাশয় থেকে মাছ সরবরাহ করে খুচরা ও পাইকার ব্যবসায়ীরাও হয়েছেন আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী। দৌলতপুর উপজেলা বাজারে খুচরা মাছ বিক্রেতা শাহীন আলী জানান, বিভিন্ন পুকুর থেকে মাছ সংগ্রহ করে খুচরা দরে বিক্রি করে সে এখন নিজেকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলেছেন। তবে বর্তমানে খুচরা বাজারে মাছের দাম নিয়ে ভোক্তাদের মধ্যে রয়েছে চরম অসন্তোষ্টি। বিভিন্ন মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, একমাস আগেও যে মাছের দাম ছিল ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা কেজি এখন তা ৩২০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। বাবুল হোসেন নামে একজন ক্রেতা জানান, বাজারে মাছসহ সব জিনিসের দাম অনেক বেশি। আমাদের মত নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের ব্যয় বেড়েছে, কিন্ত আয় বাড়েনি। প্রাকৃতিক উপায়ে মাছ চাষ বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে থাকেন মৎস্য দপ্তর।

যার ফলে জেলায় মাছ চাষ সম্প্রসারিত হয়েছে। আর এ থেকে বছরে ৪৩ হাজার ১৫০ টন বা তারও বেশি মাছ উৎপাদন হয়ে থাকে। যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল বারী। মাছ দেশের অন্যতম অর্থনৈতিক খাত। আর এ খাতকে আরো সমৃদ্ধ করতে হলে প্রয়োজন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার। আর এমনটাই মনে করেন এ অঞ্চলে মৎস্য চাষিরা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত