বাংলাদেশ এবার এক নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে চীন এবং ভিয়েতনাম এর চেয়েও অনেক বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। গত জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি পরিমাণ ৭৯ কোটি ৯৭ লাখ ডলার পৌঁছেছে, যা গত বছরের জানুয়ারির তুলনায় ৪৫.৯৩% বেশি। গত বছরের জানুয়ারিতে এই পরিমাণ ছিল ৫৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল (অটেক্সা) এর হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে এ খবর জানিয়েছে।
তারা আরও জানায়, বাংলাদেশ এক বছরে এতো বিশাল প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা চীন এবং ভিয়েতনামকে ছাড়িয়ে গেছে। মার্কিন বাজারে এই গতিবিধি বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য একটি অত্যন্ত ইতিবাচক দিক হিসেবে কাজ করছে। এক বছর আগের তুলনায়, চীন ১৩.৭২% এবং ভিয়েতনাম ১৯.৯০% প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। তবে, বাংলাদেশের ৪৫.৯৩% প্রবৃদ্ধি বিশেষভাবে প্রশংসনীয়, যা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। এছাড়া, প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান এর পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে ৩৩.৬৪% ও ১৭.৫০% হলেও, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি তাদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এই পরিসংখ্যান বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের আন্তর্জাতিক বাজারে দ্রুত উন্নতি এবং বিশ্ববাজারে পোশাক শিল্পের নেতৃত্ব দেয়ার সম্ভাবনা আরো উজ্জ্বল করছে। এদিকে, বিজিএমইএ এই প্রবৃদ্ধিকে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ঐতিহাসিক অর্জন হিসেবে বিবেচনা করছে এবং এটি বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য হিসেবে গণ্য হচ্ছে। বিজিএমইএ আরও জানিয়েছে যে, বাংলাদেশের পোশাক শিল্প মার্কিন বাজারে অধিক গুরুত্ব পাচ্ছে এবং এই প্রবৃদ্ধি আরও দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাকের চাহিদা বাড়ানোর প্রধান কারণ হলো বাংলাদেশের উৎপাদন ক্ষমতা, দক্ষ শ্রম, এবং উন্নত মানের পোশাক উৎপাদন। এছাড়া, বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে সরকারের প্রণোদনা ও সুবিধাগুলিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের এই সফলতার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে, বিজিএমইএ আশা করছে, ভবিষ্যতে আরও আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ বাড়বে, এবং আরও দেশীয় উদ্যোক্তা ও প্রস্তুতকারকরা এই সেক্টরে প্রবেশ করবে। এভাবে, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে তার স্থান আরও দৃঢ় করছে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে তার অবস্থান আরও শক্তিশালী হচ্ছে।