বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে বিদেশি ঋণের বোঝা বয়ে বেড়াতে হচ্ছে সরকারকে। প্রতি মাসেই আগের নেওয়া ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে বিদেশি ঋণের যে পরিমাণ অর্থছাড় হয়েছে তার ৬৭ ভাগই চলে গিয়েছে আগের ঋণ পরিশোধে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর জন্য বিদেশি উন্নয়ন সহযোগীদের জন্য প্রতিশ্রুত ঋণের অর্থছাড় হয়েছে ৫৬০ কোটি ৮১ লাখ ডলার। আগের বছরের একই সময়েও অর্থছাড়ের পরিমাণ ছিল ৭০২ কোটি ডলার। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বিদেশি ঋণের অর্থছাড় কমেছে ২০ শতাংশের বেশি। মে মাস পর্যন্ত আগের বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধে বাংলাদেশের খরচ হয়েছে ৩৭৮ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। আগের বছরের একই সময়ে এ ঋণ পরিশোধের হার ছিল ৩০৬ কোটি ৮১ লাখ ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ঋণ পরিশোধের হার বেড়েছে ২৩ শতাংশের বেশি। চলতি বছরের ১১ মাসের প্রাপ্ত ঋণ ছিল ৫৬০ কোটি ৮১ লাখ ডলার। বিপরীতে পরিশোধিত ঋণের পরিমাণ ৩৭৮ কোটি ৪৬ লাখ ডলারের বেশি। অর্থাৎ এ সময়ে প্রাপ্ত ঋণের ৬৭ ভাগই চলে গেছে আগের ঋণ পরিশোধে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয় কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে রপ্তানি আয় ও প্রবাসী আয় বাড়ায়। তাছাড়া উন্নয়ন সহযোগীদের বাজেট সহায়তায়ও বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ফলে ঋণ পরিশোধের চাপ কিছুটা মিটেছে প্রবাসী ও রপ্তানি আয় বাড়ার কারণে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নের দুর্বলতার কারণে উন্নয়ন সহেযাগীদের প্রতিশ্রুত বিদেশি ঋণের অর্থছাড় সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে আগামী অর্থবছরের বাজেটেও বিদেশি ঋণের চাহিদা কমিয়ে ৮৫ হাজার কোটি টাকায় নামানো হয়েছে। এটি চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ছিল ১ লাখ কোটি টাকা।