ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল

কুতুবদিয়ার কৈয়ারবিল ও সাঁথিয়ার জোড়গাছা বিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন

কুতুবদিয়ার কৈয়ারবিল ও সাঁথিয়ার জোড়গাছা বিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন

গত জুনে দেশের প্রায় সাড়ে ৬৫ হাজার স্কুলের ছাত্র ছাত্রিদের অংশগ্রহণে শুরু হয় প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলা। ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায় শেষে কাল অনুষ্ঠিত হল ফাইনাল। বালক বিভাগের ফাইনালে চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২-০ গোলে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ সদরের ইছাঘরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। সেরা খেলোয়াড় কৈয়ারবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মো. নাহিদ হোসেন তোহা ও সর্বোচ্চ গোলদাতা একই বিদ্যালয়ের মো. জুবাইর। অন্যদিকে বালিকা বিভাগের ফাইনালে রাজশাহী বিভাগের পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলার জোড়গাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩-১ গোলে চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বাঞ্ছারামপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। সেরা খেলোয়াড় জোড়গাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লামিয়া খাতুন এবং সর্বোচ্চ গোলদাতা বাঞ্ছারামপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হিয়ামনি। খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ফরিদ আহাম্মদ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। পাবনার অজপাড়া গাঁয়ের জোড়গাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী লামিয়া খাতুন। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হয়ে এখন তার স্বপ্ন এক সময় জাতীয় দলে খেলবে। সাবিনা খাতুন, রিতুপর্ণা চাকমাদের উত্তরসূরী হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনা। তার কথা, ‘সাবিনা আপুদেরকে খোলা বাসে চড়ে আনন্দ করতে দেখেছি। দেশের সবাই তাদেরকে দেখেছেন। আমারও স্বপ্ন একদিন জাতীয় দলে খেলব। ছাদখোলা বাসে সংবর্ধনা পাব।’ সর্বোচ্চ গোলদাতা বাঞ্ছারামপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হিয়ামনি গোল করতেই বেশি ভালবাসে। তার কথা, ‘আমি গোল করতেই বেশি ভালবাসি। জাতীয় দলে একজন ভালমানের স্ট্রাইকার হতে চাই।’ চ্যাম্পিয়ন দলের কোচ মিঠু মিয়া এই মেয়েদের নিয়ে আশাবাদি, ‘আমি নিজ হাতে তৈরি করেছি এই মেয়েদের। গত আট বছর ধরেই তাদেরকে খেলা শেখাচ্ছি। আমার বিশ্বাস এক সময় তারা দেশের জাতীয় নারী দলের হয়ে মাঠ মাতাবে।’ মেয়েদের সুরক্ষার বিষয়ে কোচের কথা, ‘প্রত্যেক বাড়ি থেকে মেয়েদেরকে আমি নিজে মাঠে নিয়ে আসি। আবার সন্ধ্যার আগেই তাদেরকে বাড়ি ফিরিয়ে দিয়ে আসি। তাই কোন সমস্যা হয় না। আমার সাজানো বাগান ফুটবল একাডেমিতে অনুশীলন করে তারা।’ অপরাজিত থেকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আনন্দিত বালক বিভাগের সেরা কৈয়ারবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজার শাহিনুুল ইসলাম। তার কথা, ‘ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে আমরা ১৬টি ম্যাচ খেলে একটিতেও হারিনি। তবে ইউনিয়ন পর্যায়ে কেবল একটি ম্যাচে ড্র হওয়ায় টস করে আমরা জেলা পর্যায়ে আসতে পেরেছি। এটাই ছিল চমক।’ ছেলেরা কঠোর পরিশ্রম করেছে বলেও জানান শাহিনুল, ‘সকাল বিকাল তিন ঘণ্টা করে অনুশীলন করেছে তারা। এর পাশাপাশি লেখাপড়া করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে অনেক কঠিন সময় পার করেছে তারা। এখন অবশ্য তাদের সব কষ্ট দূর হয়ে গেছে।’ কুতুবদিয়ার কৈয়ারবিল ও সাঁথিয়ার জোড়গাছা বিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত