ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে বন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাতের জন্য ঘুষ দিতে হচ্ছে—এমন অভিযোগ উঠেছে কারারক্ষী আল আমিনের (ব্যাচ নং: ২২৯৫১) বিরুদ্ধে।
বন্দিরা সাক্ষাতের জন্য প্রতিবার গুণছেন ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। রাজনৈতিক বন্দিদের ক্ষেত্রে নিয়মিত সাক্ষাতের সুযোগের পরিবর্তে টাকার বিনিময়ে একাধিকবার সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
বর্তমানে এই কারাগারে প্রায় ১৩০০ বন্দি রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ১২০ থেকে ১৫০ জন স্বজন বন্দিদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আসেন। মূল ফটক অতিক্রম করলেও টাকা না দিলে সাক্ষাতের অনুমতি মেলে না বলে অভিযোগ দর্শনার্থীদের।
কারাগারে দায়িত্বরত কারারক্ষী আল আমিনের কাছে স্বজনরা আশ্রয় নেন এবং তাকে ঘুষ দিয়েই সাক্ষাতের সুযোগ পান। অভিযোগ রয়েছে, তিনি সাক্ষাতের বিনিময়ে জনপ্রতি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা নেন। এমনকি আদালত থেকে জামিনের কাগজপত্রে ‘ভুল’ দেখিয়ে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের ঘটনাও রয়েছে।
আইন অনুযায়ী, বন্দির সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আদালতের অনুমোদিত ‘ওকালতনামা’ কারাগারে জমা দেওয়ার জন্য একটি নির্ধারিত বক্স থাকার কথা। তবে কয়েক মাস আগে সেটি গায়েব হয়ে গেছে। অভিযোগ রয়েছে, বক্সটি সরিয়ে ফেলেছেন আল আমিন নিজেই, যাতে তিনি ওকালতনামা সহির কাজটি নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। এই সহির কাজের জন্যও নেওয়া হয় ১ হাজার টাকা পর্যন্ত।
কারাগারের ভেতরে চাকরি পেতে, কিংবা ছুটি পেতে হলেও আল আমিনের কাছে ঘুষ দিতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে অন্য কারারক্ষীদের পক্ষ থেকেও।
উল্লেখযোগ্যভাবে, আল আমিন এর আগেও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কারাগারে দায়িত্ব পালনকালে একই ধরনের অভিযোগে বিতর্কিত ছিলেন। সেখানে এক জেএমবি বন্দিকে মোবাইল ব্যবহারের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে তাকে ওই কারাগার থেকে প্রত্যাহার করা হয়।
এই বিষয়ে কারারক্ষী আল আমিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, "আমি শুধু ছুটি ও অভ্যন্তরীণ দায়িত্ব সংক্রান্ত কাজ দেখি, কোনো অনিয়ম করি না।"
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারের সদ্য যোগ দেওয়া জেল সুপার ওবায়দুর রহমান বলেন, “আমি নতুন যোগদান করেছি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
