আমি বয়স নিয়ে লজ্জিত নই।
বছরগুলো আমার ভেতরে নদী তৈরি করেছে
যেখানে বেদনা, আনন্দ, অভিমান আর ক্ষমা
একসঙ্গে সাঁতার কাটে নিঃশব্দে।
আমার শরীরে সময়ের ছাপ আছে,
ভাঁজ আছে চোখের পাশে,
কিন্তু এসব আমি লুকাই না
এই রেখাগুলোই তো আমার জীবন-মানচিত্র।
একাকিত্ব এখন আর আগের মতো ভয় পাই না।
সে আমার আয়নার পাশে দাঁড়ানো বন্ধু,
যার চোখে আমি দেখি
নিজেকে অলংকারহীন, সত্যিকারের আমি।
নিঃসঙ্গতা এখন এক রকম আত্মবিশ্বাস,
যেখানে আমি ভাবি, লিখি,
নিরবে কৃতজ্ঞ হই সব না-পাওয়ার প্রতিও।
তবে একটা ভয় এখনও থেকে যায়
আমি যেন কারও জীবনে অতিরিক্ত ভার না হয়ে উঠি।
যত্ন যেন ভালোবাসা থাকে, দায়িত্ব নয়;
আমার উপস্থিতি যেন হিসেবের অঙ্ক না হয় কারও জন্য।
আমি চাই, এই বয়সটুকু হোক
একটা বইয়ের শেষ অধ্যায়ের মতো,
যেটা পড়ার পর পাঠক চুপ করে বসে থাকে
আর ভাবে কি সুন্দর করে বেঁচে ছিলেন!
আমি চাই, কেউ আমাকে করুণা না করুক।
আমি চাই, তারা আমার চোখে দেখুক
একজন যোদ্ধাকে, যার হাতে এখনও সময়ের ছায়া আছে।
আমি চাই না, আমার দুর্বলতা
হোক কারও আত্মত্যাগের কাহিনি,
বরং হোক নিজের সঙ্গে আমার বোঝাপড়ার শান্ত গান।
শেষ বয়সটা আমি কাটাতে চাই
এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চায়ের মতো
যার প্রতিটি চুমুকে থাকবে
স্মৃতির উষ্ণতা, জীবনের মাধুর্য,
আর এমন একটা প্রশান্তি,
যা কেবল জীবনকে আসল অর্থে ভালোবাসা থেকে আসে