আছিয়া আফরোজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় বর্ষে সাইকোলজি বিভাগে পড়াশোনা করছে। দেখতে যেমন সুন্দরী, ঠিক তেমনি সুক্ষ মেধার অধিকারী। ক্লাসের শিক্ষক থেকে শুরু করে সহপাঠী প্রত্যেকে যেন মুগ্ধ তার জ্ঞান ও গুণে। শুধু তাই নয়, কারিকুলাম এক্টিভিটিসেও সমানভাবে সরব। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ছেলেরাই তার প্রতি মুগ্ধ। তার একজন ক্লোজ বন্ধু আছে নাম সাইফুল। ছেলেদের মধ্যে সে আছিয়ার ভালো বন্ধু। ভার্সিটির সবাই মনে করে, তারা প্রেমিক-প্রেমিকা। আর মনে না করারও কোনো কারণ নেই, সাইফুল নিয়মিত আছিয়াকে নিয়ে কবিতা লেখে। আর আছিযাও তার লেখা কবিতা ভীষণ পছন্দ করত।
কিন্তু ইদানীং সে কোনো ছেলে সহপাঠির সঙ্গে কথা বলে না। হঠাৎ করে আছিয়ার এই পরিবর্তন নিয়ে, সবাই বলাবলি করছে যে সে প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে।
অপরদিকে, সাঈদ দেখতে খুব সুদর্শন পুরুষ। ক্লাসের সবাই বলে, সে যখন কথা বলে তা আবৃত্তির মতো শোনায়। সে এসএসসি এবং এইচএসসি তে বোর্ডে স্ট্যান্ড করা ছাত্র ছিল, একথা পুরো বিশ্ববিদ্যালযের সবাই জানে। সাঈদের কাছে হিমি, তোড়া, বিথী, মুজাহীদ, ফারুক, আছিয়া, মুসফিকসহ অনেকেই প্রাইভেট পড়ে। তবে অবাক করা বিষয় হচ্ছে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছে না আছিয়া। এমন কি ক্লাসেও উপস্থিত থাকছে না, ফোন দেয় বন্ধু মহলের সবাই কিন্তু ফোন অফ।
আছিয়ার বন্ধুদের মধ্যে হিমিও আছিয়ার মতো খুব সুক্ষ মেধার, অনেকই বলে হিমির চোখ নাকি চারটা। এদিকে সাঈদ স্যার এবং দীপা ম্যাডাম আছিয়াকে খুঁজছিল কারণ বৈশাখী অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করার জন্যে। এরই মধ্যে হিমি ক্লাসে সবার সামনে বলে উঠল, আছিয়ার বিয়ে হয়ে গেছে। তবে ছেলে কে তা জানি না। প্রায় ৭ মাস ২১ দিন পর আছিয়ার সঙ্গে হিমির দেখা। খুব আগ্রহ নিয়ে কথা বলতে গিয়েছে হিমি। আছিয়া অন্তঃসত্ত্বা, চোখে মুখে মাতৃত্বের ছাপ। দেখতে আরও সুন্দর লাগছে আছিয়া কে। আছিয়া হিমিকে বলল ২১ দিন প্রেম করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। স্বামীর বেশ প্রশংসা করছে তার বান্ধুবির কাছে। তবে, তার স্বামীর পরিচয় নিয়ে কথা বলছে না। বরং স্বামীর প্রসঙ্গে উঠলেই কথা এড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু উৎসুক হিমি কথার ছলে জেনেই নিল তার স্বামীর পরিচয়। সময় ফুরাল, আজ ১৭ ডিসেম্বর আছিয়া ফুটফুটে একটি কন্যাসন্তান জন্ম দিল।
কি আনন্দ? কি আনন্দ? তবে হঠাৎ আছিয়া বুঝতে পারল, যে মানুষটা কে সে পরিবার এবং কাছের মানুষদের উর্ধ্বে গিয়ে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল। সেই প্রিয় মানুষ তার কাছ থেকে দূরে সরে গেছে। সাইকোলজির স্টুডেন্ট হওয়ায় আছিয়ার খুব বেশি সময় লাগল না, ধরে ফেলেছে তার স্বামীর দূরে সরে যাওয়ার রহস্য। কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ার কারণে সাঈদের এই পরিবর্তন। তবে মা তার সন্তান এর অবজ্ঞা সহ্য করতে পারে না। তাই মাথা উঁচু করে বের হয়ে আসে সেই সম্পর্ক থেকে।