ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

চট্টগ্রামে আট বছরেও শেষ হয়নি দ্বিতীয় আউটার রিং রোড প্রকল্প

চট্টগ্রামে আট বছরেও শেষ হয়নি দ্বিতীয় আউটার রিং রোড প্রকল্প

চট্টগ্রামে শাহ আমানত সেতু থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত চট্টগ্রাম দ্বিতীয় আউটার রিং রোড প্রকল্প-২ ছিল মাত্র তিন বছরের। কিন্তু বাড়তে বাড়তে প্রকল্পের বয়স হতে চলল প্রায় আট বছর। তবুও শেষ হয়নি প্রকল্পটির কাজ। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পের মেয়াদ গণনা শুরু হয় ২০১৭ সালের জুলাই থেকে। যদিও কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের অক্টোবরে। প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড। মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ২ হাজার ২৭৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

পরে প্রথম ও দ্বিতীয় সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় বাড়ানোর পর সর্বশেষ ব্যয় দাঁড়ায় ২ হাজার ৭৭৯ কোটি ৩৯ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। সিডিএ সূত্রে জানা গেছে, নগরীর কালুরঘাট থেকে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৮ কিলোমিটার বিস্তৃত সড়কটির প্রায় ৮৩ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আর আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৭৯ শতাংশ। সাড়ে ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে রাস্তা ও বাঁধের মধ্যে ৭ কিলোমিটারের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বাকি দেড় কিলোমিটার সড়কের ভূমি ক্রয় প্রক্রিয়া চলমান আছে। এরইমধ্যে রাস্তার কার্পেটিং শুরু হয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০ ফুট উচ্চতার ৪ লেনের সড়ক কাম শহর রক্ষা বাঁধে বর্ষায় নগরীর পানি নিষ্কাশনের জন্য ১২টি স্লুইসগেট রয়েছে। এসব স্লুইসগেটের ১০টির নির্মাণকাজ শেষ। এখন চলছে মাটি ভরাটের কাজ। এছাড়া প্রতিটি স্লুইসগেটের জন্য বসানো হচ্ছে পাম্প।

৮টি পাম্প বসানো হয়েছে। চলতি বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল প্রকল্পটির কাজ। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। প্রকল্পের ১৭ শতাংশ কাজ দেড় মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা প্রায় অসম্ভব। ফলে আবারও বাড়তে যাচ্ছে এ প্রকল্পের মেয়াদ। তবে মেয়াদ বাড়লেও খরচ বাড়বে না বলে দাবি প্রকল্প পরিচালকের। সিডিএ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস থেকে চট্টগ্রাম শহরের চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, বক্সিরহাট, বৃহত্তর বাকলিয়া, চান্দগাঁও, কালুরঘাট ভারী শিল্প এলাকাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষা এবং রাস্তা নির্মাণের মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে এই সড়ক করা হচ্ছে। এতে নগরের যান চলাচলে গতি আনা, পিছিয়ে থাকা এলাকার জীবনমান উন্নয়ন, পর্যটন এবং আবাসনসহ সার্বিক ক্ষেত্রে শহররক্ষা বাঁধ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী রাজিব দাশ জানান, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে কর্ণফুলী নদীর আশপাশের এলাকায় গড়ে উঠবে আবাসন, বাণিজ্য ও পর্যটনশিল্প। পাল্টে যাবে বাকলিয়া, চান্দগাঁও ও মোহরা এলাকার দৃশ্যপট। অল্প সময়ের মধ্যে কালুরঘাট থেকে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জসহ নগরের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করা যাবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতার কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সময়ের প্রয়োজনে ও বাস্তবতার নিরিখে প্রকল্পে বারবার পরিবর্তন আনতে হয়েছে। এছাড়া ভূমি অধিগ্রহণ খাতে টাকা ছাড় জটিলতায় প্রকল্পের কাজ সময়মত শেষ করা যাচ্ছে না। যে সময় আছে তাতে প্রকল্পের বাকি কাজ পুরোপুরি শেষ করতে পারা অসম্ভব। তাই সময় বাড়ানোর জন্য যে প্রক্রিয়া আছে, শুরু করেছি। এ বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস জানান, আমাদের চেষ্টা আছে দ্রুত কাজ শেষ করে দেওয়ার। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত