চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই উপজেলার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু ও ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। বিশেষ করে চলতি জুন মাসে প্রতিদিন নতুন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হচ্ছে। সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. জসিম উদ্দিন জানান, ‘বর্ষাকাল ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকির মৌসুম। কারণ এ সময় এডিস মশার প্রজননের উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর এখনও ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কম। ২০২৪ সালে সাতকানিয়ায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৬৬ জন। এবছর ২০২৫ সালে জুন মাস পর্যন্ত রোগীর সংখ্যা ১৬৯ জন। তবে জুন মাসে আক্রান্তের হার গত মাসগুলোর তুলনায় বেশি।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০২৩-২৪ সালে দেশে রেকর্ড পরিমাণ ডেঙ্গু সংক্রমণ হয়েছিল, যার ৭০ শতাংশের বেশি ছিল জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে। তাই এ সময় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সংক্রমণ ফের বাড়তে পারে। সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য ১৫টি বেড প্রস্তুত রেখে ডেঙ্গু কর্ণার করা হয়েছে। এখানে উবহমঁব ঘঝ১ এবং ওঈঞ ভড়ৎ উবহমঁব পরীক্ষার সুবিধা রয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জনগণকে বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখা, তিন দিন পরপর জমে থাকা পানি ফেলা, মশারি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের ভাষ্য, ডেঙ্গুর সাধারণ উপসর্গের মধ্যে রয়েছে হঠাৎ জ্বর, মাথা ও চোখের পেছনে ব্যথা, পেশি ও জয়েন্টের ব্যথা, বমিভাব ও ত্বকে লালচে দাগ। এসব উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আমরা ডেঙ্গু রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়াতে প্রচারণামূলক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে। অন্যদিকে, সাতকানিয়ার বেশিরভাগ বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে জানা গেছে, ডেঙ্গু ও ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এ সপ্তাহে অনেক বেশি। হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ রোগী ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হলেও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীও প্রতিদিন শনাক্ত হচ্ছে। রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালের বেড সংকট দেখা দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়। স্বাস্থ্য বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সাতকানিয়ার সাধারণ মানুষকে এ বিষয়ে বিশেষভাবে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর ভয়াবহতার পুনরাবৃত্তি ঠেকানো সম্ভব হয়।