ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

মদিনা নামের ইতিহাস

নাসিম নুর
মদিনা নামের ইতিহাস

ইসলামি ইতিহাস ঐতিহ্যের শহর মদিনা। বিশ্ব মুসলিমের কাছে এই শহর নবীর শহর হিসেবে পরিচিত। মদিনা ছাড়াও এই শহরের আরও বেশ কয়েকটি নাম আছে। নামগুলো হলো- তাইবাহ, ইয়াসরিব এবং দারুল হিজরাহ।

মদিনা আরবি শব্দ। অর্থ শহর। নবী মুহাম্মাদ (সা.) ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে মক্কা থেকে হিজরত করে এখানে আগমনের পর এর নাম মদিনা রাখা হয়। এ শহরকে ‘তাইবা’ নামেও ডাকা হয়, যা আরবি শব্দ ‘তিব’ থেকে এসেছে। অর্থ ‘স্নিগ্ধতা বা পবিত্রতা’। আরেকটি নাম হলো ‘দারুল হিজরাহ’। যার অর্থ ‘হিজরতের স্থান’। কারণ, এখানেই নবীজি (সা.) হিজরত করেছিলেন। মদিনার ওয়াসিস অঞ্চলে প্রথমে দুটি কাবিলা বসতি গড়ে তোলে। তারা হলো- এক. বানু মাতরাওলিল। দুই. বানু হাওফ। এই দুই গোত্রের বংশধারা নবী নুহ (আ.)-এর ছেলে শাম থেকে এসেছে। পরবর্তী কালে ইয়েমেনি গোত্র বানু আওস এবং বানু খাযরাজ মদিনায় এসে বসতি স্থাপন করে। মানব ইতিহাসের প্রথম লিখিত সংবিধান রচনা করেন নবী মুহাম্মদ (সা.)। এটি মদিনা সনদ নামে পরিচিত। ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে হিজরতের পর মহানবী (সা.) এই লিখিত সংবিধান রচনা করেন। এটি ছিল ইতিহাসের প্রথম লিখিত সংবিধান। এর মাধ্যমে মুসলিম ও ইহুদিদের মাঝে পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ধারণ করা হয়। সকল সম্প্রদায়ের জন্য নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়।

নবীজি (সা.)-এর সময় এবং পরে ইসলামের প্রথম চার খলিফার আমলে মদিনা ছিল ইসলামি সাম্রাজ্যের রাজধানী। পরবর্তীতে উমাইয়া খেলাফত প্রতিষ্ঠিত হলে রাজধানী দামেস্কে স্থানান্তরিত হয়। নুহ (আ.)-এর এক ছেলের নাম ছিল ইয়াসরিব। তার বংশধরদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তিনি মদিনায় এসে বসবাস করেন। তার নামানুসারে এ শহরের নাম ইয়াসরিব রাখা হয়। ইয়াসরিব অর্থ অভিযুক্ত করা বা ধমক দেওয়া। মহানবী (সা.)-এর হিজরতের পর এ নগরীর নাম রাখা হয় মদিনা। মদিনা শব্দের অর্থ শহর।

নবীজি (সা.)-এর ইয়াসরিবে আগমনে স্থানীয় সব ধর্মবিশ্বাসের এবং সব গোত্রের সব অধিবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাকে শান্তির দূত ও অভিভাবক হিসেবে সানন্দে মেনে নেয়। মহানবী (সা.)-এর আগমনে আনন্দে উদ্বেলিত জনতা নিজ শহরের নাম বদলে ফেলে রাখলেন মাদিনাতুন নবী, অর্থাৎ নবীর শহর। তখন থেকেই ইয়াসরিব হয়ে যায় মদিনা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত