সবার সঙ্গে মিলেমিশে জীবন ধারণ, সুখে-দুঃখে একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর মধ্যেই জীবনের যথার্থ সার্থকতা নিহিত। নিজের স্বার্থের জন্যই কেবল জীবন নয়। যতদিন না মানুষ অন্যকে ভালো রাখার চেষ্টা না করবে ততদিন জীবনের প্রাপ্তি অপূর্ণতা থেকে যায়। সমাজের অসহায়, অভাবী, দুঃস্থ, ভাসমান, পথশিশুদের প্রাণবন্ত করে তুলতে না পারলে সমাজ একদিকে যেমন ঋণী থেকে যায় অপরদিকে দায়িত্ব ও কর্তব্য হতে পিছিয়ে পড়ে যে কোনো মানবকূল। এ সমাজে সবাইকে নিয়েই মানুষের জীবন। অবহেলিত সুবিধাবঞ্চিত, অসহায়, কর্মক্ষম, প্রতিবন্ধী মানুষরাও চায় পেটপুড়ে খেতে। তাদের হৃদয় মনে আনন্দের স্পর্শ দেয়ার নিমিত্তে চারবছর যাবত শতাধিক ভাসমান মানুষের মধ্যে দুপুরে খাবারের ব্যবস্থা করছে মুনলাইট ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি। সংস্থাটি প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে অদ্যাবধি অসহায়দের মুখে হাসি ফুটাতে নানা রকম কার্যক্রমে নিমজ্জিত রয়েছে। প্রতিবন্ধী শিশুদের আলোকিত মানুষ গড়ার নিমিত্তে বিনা খরচে পড়াশোনার ব্যবস্থা, শীতার্তদের শীতবস্ত্র বিতরণ, ধর্মীয় উৎসবে পোশাক, খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, পিঠা উৎসব, ফল উৎসব, দুর্যোগে ত্রাণ বিতরণসহ অসহায়দের কোরবানির গরু প্রদান করে ফুলের মতোই গন্ধ ছড়িয়ে যাচ্ছে এ সংস্থাটি। এ সুগন্ধ বগুড়ার গণ্ডি পেরিয়ে সারা দেশে সুবাস ছড়ানোর ফসল হিসেবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় হতে সারা দেশে সেরা সংগঠন হিসেবে সম্মাননা পেয়েছে। খাবার নিতে আসা ছখিনা, হেমাদ্রী চাকমা, আয়েশা বেগম ও তার দুই নাতনিসহ শতাধিক নারী-পুরুষ গত করোনা শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিদিন এ খাবার পেয়ে থাকে এমন কথা জানায়। সংস্থার সহ-সভাপতি মুঞ্জুরুল হক টুটুর সাথে আলাপকালে জানান, আমাদের সংগঠনটি মূলত গরিব, অসহায় এবং অবহেলিত শিশুদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করছে। তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকলে সমাজ পরিবর্তন সম্ভব। আমরা চাই পথশিশুরা শিক্ষার আলোয় আলোকিত হোক এবং তাদের ভবিষ্যৎ নিরাপদ হোক। আমরা শুধু খাবার বিতরণেই সীমাবদ্ধ নই বরং শিশুদের শিক্ষা ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিতেও আগ্রহী। আমরা পথশিশুদের মানসিক উন্নয়ন ও শিক্ষা প্রদানের জন্য আলাদা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করার পরিকল্পনা করছি। অনেক পথশিশু খাবারের অভাবে রাস্তায় ভিক্ষাবৃত্তি করে। কিন্তু তাদের পেটে খাবার থাকলে এই পরিস্থিতি কিছুটা হলেও পরিবর্তন করা সম্ভব।