মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা দিয়েও ১৮ দিন অতিবাহিত হাওয়ার পরেও ছেলেকে ফিরে না পেয়ে ভেঙে পড়েছে ঠাকুরগাঁওয়ে একটি পরিবারটি। ছেলেকে ফিরে পাওয়াসহ অপহরণের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন এলাকাবাসী। গতকাল বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁওবাসীর আয়োজনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন কর্মসূচিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌরাস্তাায় এসে ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। মিলন হোসেন (২৩) ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার ৩নং খনগাঁও ইউনিয়নের চাপাপাড়া এলাকার পানজাব আলীর ছেলে। তিনি দিনাজপুর পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র।
মানববন্ধনে অংশ নেন মিলনের পরিবারসহ এলাকাবাসী ও স্থানীয় গনণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা। মিলনের মা বলেন, আমার ছেলেকে অপহরণ করে তারা কোথায় রেখেছে জানিনা, কেমন আছে জানি না।
অপহরণকারীরা ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছিল, আমরা গরিব খেটে খাওয়া পরিবার সবকিছু বিসর্জন দিয়ে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়েছি। মুক্তিপণের দাবি পূরণ করার পাঁচদিন অতিবাহিত হলেও তারা আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দেয়নি তারা।
দ্রুত মায়ের ছেলেকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে এবং অপহরণকারীদের আটক করে কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তির দাবি করেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টায় ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিকের পেছনে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নিখোঁজ হন মিলন। ঘটনার দিন রাত ১টার সময় ভুক্তভোগী পরিবারকে মুঠোফোনে অপহরণের বিষয়টি জানায় অপহরণকারীরা। প্রথমে ১২ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তিপণের ৩ লাখ টাকা চায় অপহরণকারীরা। পরদিন দুপুরে ৩ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় মিলনের পরিবার। তবে পরে চক্রটি ৫ লাখ টাকা দাবি করে। পরদিন মুক্তিপণ বেড়ে ১০ লাখ চায়। তিনদিন পর ১৫ লাখ চায় চক্রটি। সবশেষ ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারী চক্রটি।
সবশেষ ৯ মার্চ রাতে ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকাগামী ১০টার ট্রেনে উঠতে বলে অপহরণকারীরা। এরপর জেলার পীরগঞ্জের সেনুয়া এলাকায় চলন্ত ট্রেন থেকে ২৫ লাখ টাকার ব্যাগটি বাইরে ফেলে দিতে বলে চক্রটি। মিলনের জন্য দুই সেট পোশাকসহ ২৫ লাখ টাকা ট্রেন থেকে ফেলে দেয়ার ১০ মিনিট পর টাকা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে অপহরণকারী চক্রটি। এরপর দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে অপহৃত মিলনকে পাওয়া যাবে বলে তথ্য দেয়। কিন্তু স্টেশনে গিয়ে পাওয়া যায়নি তাকে।