ঢাকা শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ঠাকুরগাঁওয়ে খরা ভেঙে স্বস্তির বৃষ্টি

ঠাকুরগাঁওয়ে খরা ভেঙে স্বস্তির বৃষ্টি

খরা আর প্রচণ্ড দাবদাহে পুড়ছিল ঠাকুরগাঁওয়ের জনপদ। মাঠ-ঘাট, গাছপালা, মানুষ থেকে শুরু করে প্রাণী পর্যন্ত ক্লান্তিতে নিস্তেজ হয়ে পড়ছিল। দীর্ঘদিনের অপেক্ষা শেষে অবশেষে স্বস্তির পরশ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নামে মুষলধারে বৃষ্টি। দুপুর ১২টার পর থেকেই আকাশে কালো মেঘ জমতে শুরু করে, তারপরই শুরু হয় টানা বৃষ্টিপাত। মুহূর্তেই বদলে যায় চারপাশের চিত্র, শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত প্রাণ ফিরে পায় প্রকৃতি।

গত এক মাসের তীব্র খরায় শুকিয়ে যাচ্ছিল গাছপালা, ফসলের মাঠে দেখা দিয়েছিল চরম পানিশূন্যতা। কৃষকরা দিনরাত তাকিয়ে ছিলেন আকাশের দিকে। বহু প্রতীক্ষার পর এই বৃষ্টি যেন তাদের মুখে আবার হাসি ফিরিয়ে এনেছে। সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা নসিরুল আলম জানান, এই বৃষ্টি আমন ধান চাষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখন কৃষকরা বীজতলা তৈরির প্রস্তুতি নিতে পারবেন এবং জমি চাষের উপযোগী হয়ে উঠবে, যা তাদের মাঝে স্বস্তি এনে দিয়েছে।

স্বস্তি এসেছে স্বাস্থ্যখাতেও। ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রকিবুল আলম চয়ন জানান, গরমের কারণে প্রতিদিনই হিট এক্সহশন, ডায়রিয়া, মাথা ঘোরা ইত্যাদি সমস্যায় ভুগে বহু রোগী হাসপাতালে আসছিলেন। বৃষ্টির কারণে পরিবেশ কিছুটা শীতল হওয়ায় হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে, যদিও এখনও সচেতন থাকা জরুরি।

বালিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আর যেন সহ্য হচ্ছিল না, এই বৃষ্টি আল্লাহর রহমত। বালিয়াডাঙ্গীর কৃষক মনোয়ার হোসেন জানান, জমি এখন চাষের উপযোগী হয়েছে। বৃষ্টি থাকলে সময়মতো আমন বপন করতে পারব।

রিকশা চালক মুকুল রানা বলেন, এই কয়দিন রোদে রিকশা চালাতে গিয়ে মনে হচ্ছিল আগুনে পড়েছি। আজকের বৃষ্টিতে মনে হচ্ছে আবার বেঁচে গেছি। দিনমজুর হাসিনা খাতুন জানান, বৃষ্টিতে ভিজেছি ঠিকই, কিন্তু শরীরটা যেন হালকা হয়ে গেছে। বহুদিন পর এমন স্বস্তি পেলাম।

তবে ঠাকুরগাঁও আবহাওয়া অফিসে বৃষ্টিপাত পরিমাপের সরঞ্জাম না থাকায় নির্ভুল পরিমাণ জানানো যায়নি। তারপরও শহর থেকে গ্রামের মানুষের একটাই কামনা-এই বৃষ্টি যেন থাকে আরও কিছুদিন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত