ঢাকা মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

পটুয়াখালীতে সম্মেলন ঘিরে বিএনপিতে উৎসবের আমেজ

পটুয়াখালীতে সম্মেলন ঘিরে বিএনপিতে উৎসবের আমেজ

দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির বহুল প্রতীক্ষিত ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। আগামী ২ জুলাই শহরের জিমনেসিয়াম মাঠে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ, চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের সম্মেলনে জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য প্রার্থী হয়েছেন অন্তত ৮ জন। বিশেষ করে সভাপতির পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন রাশিদ চুন্নু মিয়া, স্নেহাংশু সরকার কুট্টি ও মাকসুদ আহমেদ বায়েজীদ পান্না। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদের দৌড়ে রয়েছেন মুজিবুর রহমান টোটন, দেলোয়ার হোসেন নান্নু, মনিরুল ইসলাম লিটনসহ মোট ৫ জন।

এদিকে প্রার্থিতা ঘোষণা ও প্রচারণাকে কেন্দ্র করে জেলা জুড়েই শুরু হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুন, ডিজিটাল ভিডিও প্রচারণা এবং শুভেচ্ছা বার্তার ছড়াছড়ি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে প্রার্থীদের পক্ষে অবস্থান নেওয়া ও প্রচার কার্যক্রম। তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা গেছে ব্যাপক আগ্রহ ও সরব উপস্থিতি।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এছাড়াও উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র নেতারা, যা এই সম্মেলনের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তুলেছে। দলীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, গোপন ব্যালটের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। এ নির্বাচনে ভোট দেবেন জেলার ১৫০০ কাউন্সিলর। বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, এসব কাউন্সিলর হলেন উপজেলা ও পৌর ইউনিটের সভাপতি, সম্পাদক, সাবেক নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং বিশেষ আমন্ত্রিত ব্যক্তি। দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা কাটিয়ে আশার আলো জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা মনে করছেন, এই সম্মেলনের মাধ্যমে দলীয় অচলাবস্থার অবসান ঘটবে। সর্বশেষ ২০০২ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়েছিল, যার সভাপতি ছিলেন আলতাফ হোসেন চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন স্নেহাংশু সরকার কুট্টি। পরে ২০০৯ সালে সেই কমিটি বিলুপ্ত করে রাশিদ চুন্নু মিয়াকে আহ্বায়ক করে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এরপর ২০১২ সালে সম্মেলন ছাড়াই আলতাফ চৌধুরীকে পুনরায় সভাপতি এবং এমএ রব মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি আংশিক কমিটি গঠিত হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালের ৩ নভেম্বর বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়, যার নেতৃত্বে রয়েছেন চুন্নু মিয়া।দীর্ঘ এই সময়ের মধ্যে সম্মেলন না হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা জমে উঠেছিল। তাই এবারের সম্মেলনকে অনেকে দেখছেন বিএনপির পুনর্গঠনের মোক্ষম সুযোগ হিসেবে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও তৃণমূল নেতাকর্মীদের আগমন শুরু হয়েছে। তাদের প্রত্যাশা বহুদিন পর একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হবে গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব, যারা দলকে সুসংগঠিত করে আগামীর রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারবে। দলীয় নেতাদের মতে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য জেলা পর্যায়ে পূর্ণাঙ্গ, নির্বাচিত ও শক্তিশালী কমিটির কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপির জন্য এই সম্মেলন একটি বড় সাংগঠনিক ঘটনা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত