পটুয়াখালী শহরে টানা ভারী বর্ষণে সৃষ্টি হয়েছে চরম জলাবদ্ধতা। শহরের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের নিচু এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। রাস্তা-ঘাট, বাসাবাড়ি, দোকানপাট-সবখানেই পানি। হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি জমে থাকায় স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন পৌরসভার হাজারো বাসিন্দা।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শহরের ৩, ৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নিচু এলাকাগুলো একরকম পানির রাজ্যে পরিণত হয়েছে। কোথাও রাস্তায়, আবার কোথাও ঘরের ভেতর পর্যন্ত পানি ঢুকে পড়েছে। ফলে বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন কঠিন হয়ে উঠেছে। অনেক বাসিন্দাকে রান্না-বান্না ছেড়ে পানি ঠেলে চলাচল করতে দেখা গেছে। ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হাসিবুর রহমান জানান, গতকাল রাত থেকেই পানি বাড়তে বাড়তে এখন বিছানায় উঠে গেছে। ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব কষ্টে আছি। খাওয়া-দাওয়াও করতে পারছি না ঠিকমতো। আরেক বাসিন্দা রোকসানা বেগম বলেন, জলাবদ্ধতা এখন নিত্যদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পৌরসভা শুধু আশ্বাস দেয়, কিন্তু সমস্যার কোনো স্থায়ী সমাধান হয় না। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের ভোগান্তি আরও বেশি। অনেকে রাতভর নির্ঘুম কাটিয়েছেন। অনেক পরিবারেই পানি ও শুকনো খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। স্কুলগামী শিক্ষার্থীদেরও ক্লাসে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, পটুয়াখালী শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক। বছরের পর বছর ধরে সংস্কারের অভাবে অনেক ড্রেন ময়লা ও মাটি দিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। কোথাও আবার ড্রেনেজ লাইন থাকলেও তা কার্যকর নয়। ফলে একটু ভারী বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকে দীর্ঘ সময়। ড্রেনেজ ব্যবস্থার যথাযথ উন্নয়ন না হওয়ায় জলাবদ্ধতা এখন নিত্য নৈমিত্তিক দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে।
পটুয়াখালী পৌরসভার প্রশাসক মো. জুয়েল রানা বলেন, আমরা ড্রেনেজ ব্যবস্থার সংস্কার ও উন্নয়নে এরইমধ্যে প্রকল্প গ্রহণ করেছি। কিছু এলাকায় কাজ চলমান। তবে অতিবৃষ্টির কারণে পানি সরাতে কিছুটা সময় লাগছে। দ্রুত পানি সরিয়ে নাগরিক দুর্ভোগ লাঘবে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। ২৪ ঘণ্টায় পটুয়াখালীতে ২৪১.৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস।