গত কয়েকদিনের টানা অতি বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় ভোগা ভাণ্ডারিয়ার জনজীবনে অবশেষে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। গত শুক্রবার সকাল থেকে আবহাওয়া পরিষ্কার হতে থাকায় প্লাবিত হওয়া নিম্নাঞ্চলের পানি ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে।
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সৃষ্ট বৈরি আবহাওয়ায় অতি বৃষ্টিতে স্থবির হয়ে পরেছিল জনজীবন। দুর্ভোগের শিকার নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ কাজ করতে না পারায় অর্থনৈতিকভাবে ব্যপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পরে এবং পানি বৃদ্ধির ফলে মৌসুমি কৃষির ক্ষেত তলিয়ে গেছে, অনেকের পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। কাঁচা, আধাকাঁচা বাড়ি-ঘরের ক্ষতি সাধন হয়েছে। অতি জরুরি প্রয়োজন ছারা মানুষ ঘরের বাহির হতে পারেনি। বেশি সমস্যায় পড়তে হয়েছে নদ-নদী তীরবর্তী জেলেদের। তারা মাছ শিকার করতে না পারায় পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনযাপন করেছেন। যদিও গত শুক্রবার বিকাল থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত বৃষ্টি না হওয়ায় জনজীবনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। প্রাণচঞ্চল ফিরে পেয়েছে মানুষ। উপজেলার সদর, ভিটাবাড়িয়া, নদমূলা- শিয়ালকাঠী, ইকড়ি, তেলিখালী, ধাওয়া, গৌরীপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম, রাস্তাঘাট ও বাজার এলাকা কয়েকদিন ধরে পানির নিচে ছিল। অনেক বাড়িঘর, স্কুল, দোকান ও খেত পানিতে ডুবে যায়। তবে আবহাওয়া উন্নতির পাশাপাশি পানি নিষ্কাশনের পথ কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় নিচু এলাকার জলাবদ্ধতা কমে আসছে।
চরখালী বেড়িবাঁধ এলাকার বাসিন্দা কুলসুম বেগম জানান, গত (শুক্রবার) পর্যন্ত ঘরের ভেতর পানি ছিল, গতকাল শনিবার থেকে নামতে শুরু করেছে। একটু স্বস্তি পাচ্ছি।
উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, অতি বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমে ৫০ হেক্টর উপশী ও ৫০০ হেক্টর স্থানীয় ধানের বীজ তলা এবং ২০০ হেক্টর সবজির জমি বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। তবে পানি দ্রুত নামলে বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক রেহেনা আক্তার জানান, পৌরসভাসহ উপজেলার বাকি ছয়টি ইউনিয়নে কৃষকদের মৌসুমি শাক-সবজি, আমন বীজতলার আংশিক ক্ষতি ছাড়াও প্রায় ১২৭০ জন মানুষ দুর্ভোগের শিকার হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ২৯/৩০টি বাড়িঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে।