ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

মুসল্লিদের ভোগান্তির অবসানে ডিসির উদ্যোগ

মুসল্লিদের ভোগান্তির অবসানে ডিসির উদ্যোগ

শল্পনগরী নারায়ণগঞ্জ শহরের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মুসল্লিদের ৬০ বছরের ভোগান্তির অবসান ঘটাতে আধুনিক ওয়াশ ব্লক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিয়া। প্রায় ছয় দশক আগে, ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত শহরের প্রাণকেন্দ্রের এই মসজিদটিতে এতদিন পর্যন্ত মুসল্লিদের জন্য ছিল না স্বাস্থ্যসম্মত কোনো অজুখানা, প্রস্রাবখানা, এমনকি ভালো একটি পায়খানাও। জরুরি প্রয়োজনে নামাজে আগতরা জেলা আইনজীবী সমিতির পায়খানা ব্যবহার করতেন। পাশেই আদালত চত্বর ও একাধিক বিপণিবিতান থাকায় যোহরের নামাজের সময় ওজু বা বাথরুম ব্যবহারের জন্য মুসুল্লিদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। স্থানীয়রা জানান, পুরাতন কোর্ট এলাকা হওয়ায় এখানে বিচারক, আইনজীবী, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষও দূর-দূরান্ত থেকে নামাজ পড়তে আসেন। দীর্ঘদিন ধরে মসজিদ কমিটি নিয়ে রাজনৈতিক বিরোধ থাকায় প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন থমকে ছিল। তবে এই পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিয়া বিষয়টি জেনে স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নেন। তিনি ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে গত শুক্রবার আধুনিক ওয়াশ ব্লকের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা হাসানুজ্জামান জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলামের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ডিসি সাহেবের এই উদ্যোগের পরে মুসল্লিদের দীর্ঘদিনের একটি বড় সমস্যা সমাধান হতে যাচ্ছে। মসজিদ কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেন, জেলা প্রশাসক মসজিদের মুসল্লিদের ভোগান্তির কথা জানা মাত্রই আন্তরিকতা নিয়ে সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছেন। এজন্য তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এর আগে সমবেত মুসুল্লিদের উদ্দেশে বক্তব্যকালে ডিসি জাহিদুল ইসলাম বলেন, পজলা প্রশাসক হিসেবে এই জেলায় যোগ দেওয়ার পরে এর আগে এই মসজিদে এসেছিলাম। আমাকে এই মসজিদের সার্বিক বিষয় জানানো হয়েছিল। আমাদের সাধ আছে, অনেক কিছু করতে ইচ্ছে করে। কিন্তু আমাদের সামর্থ্য সীমিত। আমরা এরইমধ্যে ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ এনেছি আমাদের মুসুল্লি ভাইদের জন্য, যারা ওজু করতে আসেন, নামাজ পড়তে আসেন তাদের জন্য সুন্দর একটা ব্যবস্থা করার উদ্দেশ্যে। আমি আগামীতেও এখানে কত বরাদ্দ দেওয়া যায় সেটা চেষ্টা করব। আগামী মাসেই আরেকটা বরাদ্দের জন্য আবেদন করব,যোগ করেন ডিসি। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন মসজিদ কমিটি না থাকায় স্থানীয় গণ্যমান্যদের অনুরোধে পদাধিকারবলে জেলা প্রশাসককে সভাপতি করে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গঠনের মাত্র সাত দিনের মাথায় মসজিদ উন্নয়নে কাজ শুরু করেন জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিয়া। বর্তমানে দুই তলা বিশিষ্ট এই মসজিদে একসঙ্গে প্রায় এক হাজার মুসুল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদের পরিচালনায় রয়েছেন একজন খতিব, দুজন মুয়াজ্জিন, দুজন খাদেম এবং একজন ক্লিনার।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত