
নিজের জেলার দুর্নীতি প্রতিরোধে চুয়াডাঙ্গাবাসীকে অগ্রণী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। গতকাল সোমবার সকালে ১০টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সাহিত্য মঞ্চে অনুষ্ঠিত দুর্নীতি দমন কমিশনের ১৮৮তম গণশুনানিতে দুদক চেয়ারম্যান একথা বলেন। তিনি আরও বলেন, আমরা চুয়াডাঙ্গা এসেছি, এটি সৌভাগ্যের বিষয় নয়। বরং আমাদের এখানে আসা প্রমাণ করে যে এখনও দুর্নীতি রয়েছে। যদি চুয়াডাঙ্গায় দুর্নীতি প্রতিরোধের প্রয়োজন না পড়ত, সেটাই হত প্রকৃত সৌভাগ্য। ড. মোমেন বলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রধান দায়িত্ব জনগণের সেবা নিশ্চিত করা। দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়াই সবার লক্ষ্য হওয়া উচিত। ‘সবাই মিলে গড়বো দেশ, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ’- এই স্লোগানে আয়োজিত গণশুনানির আয়োজন করে সমন্বিত দুর্নীতি দমন কমিশন ঝিনাইদহ কার্যালয়, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ কমিটি। সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন খুলনা বিভাগীয় দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক জালাল উদ্দীন আহম্মদ। আরও বক্তব্য দেন দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী, মহাপরিচালক আক্তার হোসেন এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) জামাল আল নাসের। গণশুনানিতে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নাগরিকরা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেন। শুনানির শুরুতেই জেলা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মহসিন আলী, চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. হাদী মো. জিয়া উদ্দিন আহম্মদ, সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস এবং দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. অনিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়। দুদক চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন শুনানিতে উপস্থিত থেকে প্রত্যেকটি অভিযোগ মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন।
ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম যাতে না ঘটে সেজন্য সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও চিকিৎসককে সতর্ক করেন তিনি। এছাড়া, চুয়াডাঙ্গা সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ও পৌরসভার বিরুদ্ধে জমি নিবন্ধন, অবকাঠামো নির্মাণ ও কর আদায় সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগও গণশুনানিতে তোলা হয়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আহমেদ মাহবুব উল ইসলাম, নয়ন কুমার রাজবংশী, চার উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রধান, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য, সাংবাদিক ও স্থানীয় জনগণ।