
ছোট ফেনী নদীর ওপর ব্রিজ নির্মিত না হওয়ায় সোনাগাজী ও কোম্পানিগঞ্জের কয়েক লক্ষাধিক লোকের নদী পারাপারে ভোগান্তি লেগেই আছে। জানা যায়, ১৯৬১-৬২ ইং সালে ছোট ফেনী নদীর ওপর কাজির হাট নামক স্থানে ২০ গেইট বিশিষ্ট একটি রেগুলেটার নির্মাণ করা হয়। ওয়াপদা (বর্তমান পানি উন্নোয়ন বোর্ড) উক্ত রেগুলেটর রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রতি বছর রংসহ মেরামতের জন্য ১০ লক্ষাধিক টাকার তহবিল প্রদান করেন। নির্মাণের পর থেকে ১৯৭০ ইং পর্যন্ত উক্ত টাকায় রক্ষণাবক্ষণের কাজ চলছিল। স্বাধীনতার পর ওয়াপদা বাদ দিয়ে উক্ত মন্ত্রণালয়কে পানি উন্নয়ন বোর্ড করা হয়।
রাষ্ট্রের খরচ কমাতে জনবল ও মেরামতের টাকা অর্ধেকে নেমে আসে। উক্ত টাকায় মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের নামে চলে হরিলুট। যার ফলে যথাযর্থ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ না করার কারণে ২০০২ সালে রেগুলেটরটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। রেগুলেটরটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার পর থেকে সোনাগাজী উপজেলার ৫নং চরদরবেশ, বগাদানা, মঙ্গলকান্দি, আমিরাবাদ ইউনিয়নসহ আরও কয়েকটি ইউনিয়নের লোকজন ও নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার চর হাজারী, চরপার্বতি ইউনিয়নসহ কয়েকটি ইউনিয়নের অধিকাংশ লোকের নদী পারাপারে ভোগান্তি লেগেই আছে।
জানা যায়, কাজীর হাট রেগুলেটর টি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার পর উক্ত রেগুলেটর থেকে ২০ কিলোমিটার ভাটিতে মুছাপুর নামক স্থানে একই নদীতে অন্য একটি রেগুলেটর স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করে ৪ দলীয় জোট সরকার। উক্ত রেগুলেটরটির কাজের উদ্বোধন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ২০২৪ সালো ১৭ আগস্ট মুছাপুর রেগুলেটর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। প্রতিদিন জোয়ার ভাটার কারণে নৌকা চলাচল ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ৪ দলীয় জোট সরকারে প্রতিশ্রুতি ছিল কাজীর হাট রেগুলেটর ওই স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। কিন্তু ব্রিজ নির্মাণ হয়নি।
২০১৫ সালে ফেনী ৩ আসনের এমপি হাজি রহিম উল্লাহ বহু চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। গত সংসদ নির্বাচনি প্রচারণায় কোম্পানি গঞ্জ উপজেলার চর হাজারী ইউনিয়নের পূর্ব চরহাজারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে (ধনী পাড়া) সাবেক সেতু ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নির্বাচনি জনসভায়, তার ছোটভাই কোম্পানি গঞ্জ পৌর মেয়র মির্জা কাদের ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি প্রদান করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ২০২১ ইং সালে প্রধান প্রকৌশলী এলজিইডি, সদর দপ্তর ঢাকা থেকে প্রকল্প পরিচালক আবদুল ওহাব স্বাক্ষরিত বৃহত্তর নোয়াখালী জেলা পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন- তৃতীয় পযার্য়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নির্মিত্তে বরাদ্দ প্রদান করার জন্য নির্দেশ প্রদান করলেও আজও প্রদান করা হয়নি। এরইমধ্যে ওই অঞ্চলের সর্বস্তরের জনতা ব্রিজ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন সমাবেশ করেছেন। ওই অঞ্চলের স্থানীয় শাহ আলম কোম্পানী জানান, রেগুলেটরের ওপর দিয়ে ছোট যান চলাচল করতো। যার ফলে কোম্পানি গঞ্জ ও সোনাগাজী উপজেলার লক্ষাধিক জনতার যোগাযোগের মাধ্যম ছিল। ব্রিজ নির্মাণ হলে দুই উপজেলার মধ্যে সেতু বন্ধন তৈরি হবে। সামাজিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ দুই উপজেলার মধ্যে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি বাড়বে। সোনাগাজী ও কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার বৃহত্তর জনগোষ্ঠী ব্রিজ নির্মাণের দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবায়নে বর্তমান সরকারের ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।