ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ইউএনএইচসিআরের অংশীদারি নীতি বাতিলের দাবি

ইউএনএইচসিআরের অংশীদারি নীতি বাতিলের দাবি

কক্সবাজারের স্থানীয় এনজিওদের অবজ্ঞা করে ইউএনএইচসিআর-এর ২০২৬-২৯ সালের অংশীদারিত্ব নীতি বাতিলের দাবি জানিয়েছে কক্সবাজার সিএসও-এনজিও ফোরামের নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের কো-চেয়ারম্যান রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, ইউএনএইচসিআর-এর লোকালাইজেশন রিপোর্ট ২০২৪ অনুযায়ী তাদের অর্থায়নে পরিচালিত অংশীদারদের ৮৭ শতাংশ ছিল স্থানীয় এবং জাতীয় সংস্থা জুন ২০২৫ পর্যন্ত এটি দাঁড়িয়েছে ৮৫ শতাংশে। তবে এই প্রতিবেদনের তথ্যের সঙ্গে বাংলাদেশে ২০২৬ সালের জন্য নেওয়া অংশীদারিত্বের সিদ্ধান্তের তীব্র স্ববিরোধিতা রয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থী কার্যক্রমে ২০২৬-২০২৯ এর জন্য কক্সবাজারের কোনো স্থানীয় এনজিওকেই নির্বাচন করেনি। এর অর্থ হলো, ২০২৬ সালে কক্সবাজারের স্থানীয় এনজিওগুলোর সঙ্গে ইউএনএইচসিআর-এর অর্থায়নের অংশীদারিত্ব থাকবে না। এই সিদ্ধান্ত স্থানীয় সক্ষমতাকে অবমূল্যায়ন করে।

কোস্ট ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা শাহিনুল ইসলাম বলেন, ২০১৭ সালের রোহিঙ্গা আগমনের পর থেকে কক্সবাজারের স্থানীয় এনজিও এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো মানবিক সাড়াদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তারা প্রথম সাড়াদানকারী হিসেবে কাজ করেছে এবং সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সহায়তা করেছে। আমরা এই কার্যক্রমে আন্তর্জাতিক এনজিওগুলোর তহবিল সংগ্রহ এবং প্রযুক্তিগত সক্ষমতার ক্ষেত্রে তাদের দক্ষতা ও ভূমিকাকে সাধুবাদ জানাই। তবে আমরা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং পরিপূরক অংশীদারিত্ব মডেল দাবি করি যেখানে স্থানীয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক এনজিওগুলো একসঙ্গে কাজ করবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক এনজিওগুলো কক্সবাজারের স্থানীয় এনজিওগুলোর সঙ্গে তহবিলের জন্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হচ্ছে। আইএনজিওগুলোর উচিত তাদের নিজ দেশ থেকে তহবিল সংগ্রহ করা, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ থেকে নয়। অধিকার কক্সবাজারের কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মুসা বলেন, বিশ্বব্যাংক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য মৌলিক সেবা প্রদান এবং দুর্যোগ ও সামাজিক সহনশীলতা গড়ে তুলতে স্থানীয় মানুষের জন্য ৪০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ এবং রোহিঙ্গাদের জন্য ৩০০ মিলিয়ন ডলার অনুদান মোট ৭০০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন করেছে।

বাংলাদেশ সরকার এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলো এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। অথচ তারা এই বাস্তবায়ন পরিকল্পনায় স্থানীয় এনজিও/সিএসও-গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করেনি। সিআইএইচআরডিএফ-এর কর্মকর্তা ইলিয়াস মিয়া বলেন, কক্সবাজারের টেকসই উন্নয়নে এই দারিদ্র্য ব্যবস্থাপনা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রতি চরম ঝুঁকির বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে হবে। বিপুল রোহিঙ্গা জনসংখ্যা এবং প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর তাদের চাপের কারণে এই সমস্যাগুলো আরও প্রকট হয়েছে। উখিয়া এবং টেকনাফে প্রতিদিন ২৫ মিলিয়ন লিটারেরও বেশি পানি ভূগর্ভ থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে। উখিয়া ও টেকনাফের স্থানীয় মানুষের ভবিষ্যৎ পানির নিশ্চয়তার জন্য এখনই ক্যাম্পে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন বন্ধ করতে হবে এবং বিকল্প ব্যবস্থা চালু করতে হবে। নাফ নদীর পানিকে ট্রিটমেন্ট করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সরবরাহ করতে হবে। ভূ-উপরিভাগের পুকুর খনন করে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। এতে হেলপ কক্সবাজারের কর্মকর্তা আবুল কাশেম, ইপসার কর্মকর্তা হোসনে আরা রেখা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত