
নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ভৈরব-আশুগঞ্জ মেঘনা নদীর আশুগঞ্জ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকা থেকে দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট লোড ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। প্রতিদিন ১০-১২টি লোড ড্রেজারের মাধ্যমে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা কয়েক লাখ ঘনফুট বালি উত্তোলন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে।
এতে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সিন্ডিকেট চক্র। বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ভৈরব-আশুগঞ্জ জাতীয় গ্রিড লাইনের বৈদ্যুতিক টাওয়ার, চর সোনারামপুর গ্রাম।
স্থানীয়দের দাবি, এভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে যেকোনো সময় বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও জাতীয় গ্রিড লাইনের দুটি টাওয়ার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এতে আশুগঞ্জ থেকে উত্তরবঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে শিল্প-কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি দেশ মারাত্মক অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়বে।
অন্যদিকে মেঘনা নদীর ওপর নির্মিত ৩টি সড়ক ও রেলসেতু ও চর সোনারামপুর গ্রামের শত শত পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে। তাছাড়া ৩টি সেতু ও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই জাতীয় স্বার্থে অবিলম্বে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
আশুগঞ্জের চর সোনারামপুর গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, আমাদের গ্রামের কাছ থেকে প্রতিদিন বালি তোলা হচ্ছে। এতে আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। দ্রুত বালি উত্তোলন বন্ধ করা হোক।
আশুগঞ্জ উপজেলা বিদ্যুৎ উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী আবু জাফর সাংবাদিকদের জানান, জাতীয় গ্রীড লাইনের (টাওয়ারের) ও তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছাকাছি নদী থেকে বালি উত্তোলন করার কারণে জাতীয় গ্রীড লাইনের বৈদ্যুতিক টাওয়ার ও বিদ্যুৎকেন্দ্র নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
টাওয়ারটি নদীগর্ভে বিলীন হলে উত্তরবঙ্গসহ জাতীয় গ্রীড লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়বে। তাই, দ্রুত বালু উত্তোলন বন্ধে আশুগঞ্জ বাজার কমিটি ও পাওয়ার গ্রিড কোং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফে মোহাম্মদ ছড়া জানান, মেঘনা নদীতে জাতীয় গ্রিড লাইনের কাছ থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।