ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

পরীক্ষা শুরুর আগেই ফেসবুকে উত্তরপত্র, তদন্ত কমিটি গঠন

পরীক্ষা শুরুর আগেই ফেসবুকে উত্তরপত্র, তদন্ত কমিটি গঠন

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে চলমান বার্ষিক পরীক্ষার অষ্টম ও নবম শ্রেণির দুটি বিষয়ের বহু নির্বাচনি প্রশ্নের উত্তরপত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হয়েছে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্রুত যাচাই করে ফাঁস হওয়া অষ্টম শ্রেণির প্রশ্নপত্র বাতিল করে নতুন প্রশ্নপত্র তৈরি করে পরীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। আর নবম শ্রেণির ফাঁস হওয়া উত্তরপত্র মূল প্রশ্নপত্রের সঙ্গে মিল না থাকায় সেটি বাতিল করা হয়নি। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে ওই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান ও নবম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ের পরীক্ষার বহু নির্বাচনি প্রশ্নের উত্তরপত্র। এদিন সকাল ১০টায় এসব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় নির্ধারিত ছিল।

স্থানীয় ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ওই দুটি বিষয়ের বহু নির্বাচনি পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তরপত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। লিখিত ও বহু নির্বাচনি এই দুটি ভাগে মোট ১০০ নাম্বারে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বিষয়টি নজরে আসায় দ্রুত সেটি যাচাই করে অষ্টম শ্রেণির ফাঁস হওয়া উত্তরপত্রটি হুবহু মূল প্রশ্নের সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। ফলে ওই প্রশ্নটি বাতিল করে নতুন প্রশ্নপত্র তৈরি করে পরীক্ষা নেওয়া হয়। আর ফাঁস হওয়া নবম শ্রেণির উত্তরপত্রটি মূল প্রশ্নের সঙ্গে মিল নেই দাবি করে সেটি পরিবর্তন করা হয়নি। এ ঘটনার কারণ খুঁজতে বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক রফিকুজ্জামান ইদ্রিসীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্য সদস্যরা হলেন- সহকারী শিক্ষক রাখাল চন্দ্র কর, রফিকুল ইসলাম, মাহবুবুল আলম ও হারুন অর রশিদ।

পৌরশহরের বাসিন্দা সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম বলেন, সকালে ওই উত্তরপত্র দুটি স্থানীয় অভিভাবকদের হাতে দেখেছি। পরে ছবি তুলে ফেসবুকে দেওয়ার পাশাপাশি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আরও অনেকে এসব উত্তরপত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছে। এতে বোঝা যাচ্ছে ব্যাপকভাবে এসব প্রশ্নের উত্তরপত্র শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হাতে দেওয়া হয়েছে। দ্রুত এ বিষয়ে তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, পরীক্ষার এক ঘণ্টা আগেই উত্তরপত্রগুলো ফাঁস হওয়ার খবর পাই। যাচাই করে অষ্টম শ্রেণির ফাঁস হওয়া উত্তরপত্র মূল প্রশ্নপত্রের সাথে প্রায় ৭৫ ভাগ মিল পাওয়া যায়। দ্রুত ওই প্রশ্ন বাতিল করে নতুন প্রশ্নপত্র তৈরি করে যথা সময়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। আর নবম শ্রেণির ফাঁস হওয়া উত্তরপত্রের সঙ্গে মূল প্রশ্নপ্রত্রের মিল পাওয়া যায়নি। তাই এটি বাতিল করা হয়নি। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ ঘটনায় দায়ীদের সনাক্ত করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেন পরবর্তীতে আর কেউ এমন ঘটাতে সাহস না পায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমেনা খাতুন বলেন, উত্তরপত্র ফাঁস হওয়ার বিষয়টি জেনেছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষককে বলেছি। এরইমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত