ঢাকা মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

হাসিনাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ

হাসিনাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে হাজির হতে দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পাশাপাশি আগামী ২৪ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। গতকাল চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। এ সময় মামলার আরেক আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন। ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। গত ১ জুন ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। মামলার অপর দুই আসামি হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী মামুন। একইসঙ্গে এই মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। সেদিন আদালতে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়ে শোনান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান তরফদার, মিজানুল ইসলাম; যা সব গণমাধ্যমে সম্প্রচার করা হয়। এ সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান অভিযুক্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়।

ফের ককটেল বিস্ফোরণ : রাজধানীর শিশু একাডেমি-সংলগ্ন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ফটকের কাছে গতকাল সোমবার সকালে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ককটেল বিস্ফোরণের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর। তিনি বলেন, আজ ভোর ৫টা ২৫ মিনিটের দিকে ট্রাইব্যুনালের সামনে পাকা রাস্তার ওপর বিস্ফোরণ হয়েছে। গতকাল একটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে। আরেকটি অবিস্ফোরিত অবস্থায় পাওয়া গেছে। খালিদ মনসুর বলেন, আজকের বিস্ফোরণের ঘটনায় আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন আছে। তবে এখন পর্যন্ত এর সঙ্গে জড়িত কাউকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলার গতকাল শুনানি হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। তাঁর সঙ্গে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও এই মামলার আসামি। এই মামলার শুনানি আজ দুপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এমন একটি মামলার শুনানির হওয়ার আগে সকালবেলা ট্রাইব্যুনালের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল। জুলাই গণ অভ্যুত্থানের ঘটনায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান ও মামুনের বিরুদ্ধে হওয়া এই মামলার এর আগে শুনানি হয়েছিল ১ জুন। সে দিনও একই জায়গায় (শিশু একাডেমিসংলগ্ন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ফটকের সামনে) ‘ককটেলসদৃশ পটকা’ বিস্ফোরণের কথা জানিয়েছিল শাহবাগ থানা-পুলিশ। সেই ঘটনা সম্পর্কে শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর বলেন, এর আগের বিস্ফোরণের ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। সে ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে চেষ্টা চলমান আছে।

বিস্ফোরণ নিয়ে চিফ প্রসিকিউটর যা বললেন : শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হয় এই মামলার শুনানি শেষে আজ দুপুরে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, শেখ হাসিনার মামলার শুনানির দিন ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের ঘটনা বিচার বাধাগ্রস্ত করার কোনো চেষ্টা কি না? জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এগুলো আমলে নিচ্ছি না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এগুলো ডিল করবে। বাংলাদেশের যে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে তার বিচারপ্রক্রিয়া স্মুথলি অগ্রসর হতে থাকবে। আর কেউ যদি এটাকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করে, কেউ যদি আইন অমান্যকারী কোনো কাজ করে, সে ব্যাপারে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হাইকোর্ট এলাকা থেকে ৭ ককটেল উদ্ধার : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকা ও হাইকোর্টের সামনের রাস্তা থেকে ৭টি ককটেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৬ জুন) সকালে দুর্বৃত্তরা এসব ককটেল ফেলে যায়। পুলিশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী মোতাহার হোসেন ভবনের (আইন ভবন) পাশের একটি গাছের নিচে অবিস্ফোরিত ৬টি ককটেল দেখতে পান নিরাপত্তা প্রহরীরা। পরে ঢাবির প্রক্টরিয়াল টিম ও শাহবাগ থানাকে জানানো হয়। পরবর্তীতে ককটেল নিষ্ক্রিয় করার জন্য বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে জানানো হলে সকাল সাড়ে সকাল ৯টার দিলে ককটেল গুলো নিয়ে যায় তারা।

এদিকে ভোরে হাইকোর্ট মাজার গেট ও রাস্তার বিপরীত পাশ থেকে দুইটি ককটেল ছুঁড়ে মারে দুর্বৃত্তরা। এসময় ১টি ককটেল মাজার গেটের সামনে বিস্ফোরিত হয়, অন্যটি হাইকোর্টের সামনের ওপর পাশের সড়কে অবিস্ফোরিত অবস্থায় পড়ে থাকে। পরে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট সেখানে পৌঁছায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ বলেন, সকালে প্রথমে নিরাপত্তা কর্মীরা দুটি খাবারের বক্স দেখতে পায়। পরে সন্দেহ হলে তারা ব্যাগ খুলে দেখে লাল টেপ দিয়ে প্যাঁচানো। তখন আমরা পুলিশকে খবর দেই। প্রথমে পুলিশ পরে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ঘটনাস্থলে আসে। বিষয়টি পুলিশ খতিয়ে দেখছে। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালিদ মুনসুর বলেন, ককটেলগুলো বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট উদ্ধার করেছে। সেগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত