বান্দরবানের আলীকদমে দুর্গম এলাকায় ভ্রমণে গিয়ে ‘পাহাড়ি ঢলে’ ভেসে গিয়ে দুই পর্যটকের মৃত্যু এবং একজন নিখোঁজের ঘটনায় ফেসবুকভিত্তিক ভ্রমণ গ্রুপ ‘ট্যুর এক্সপার্ট’-এর অ্যাডমিন বর্ষা ইসলাম বৃষ্টিকে (২৪) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গতকাল শনিবার সকালে এ ঘটনায় মৃত স্মৃতি আক্তারের পিতা হাবিবুর রহমান, বর্ষা ইসলামকে আসামি করে আলীকদম থানায় মামলা দায়ের করেন বলে জানান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা জহির উদ্দিন।
মামলা দায়েরের পর সেনাবাহিনীর সহায়তায় বর্ষা ইসলামকে আলীকদম থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান ওসি।
মামলার বিষয়ে ওসি জানান, মামলার অভিযোগে বলা হয়, বর্ষা ইসলাম কর্তৃক আয়োজিত ট্রেকিং ট্যুরে ৮ জুন রাতে ৩৩ সদস্যের একটি দল রওনা দেয়। ১০ জুন বর্ষা ইসলাম ১২ জন সদস্য ও একজন লোকাল গাইডসহ আন্ধারমানিক ট্রেইলের দিকে অগ্রসর হন। অপরদিকে স্মৃতি আক্তারসহ ২০ জনকে পাহাড় সম্পর্কে অনভিজ্ঞ এক ব্যক্তির তত্ত্ববধানে আলীকদমে ফেরত পাঠানো হয়।
তিনি আরও জানান, ১১ জুন বিকালে শামুক ঝর্ণা এলাকায় হঠাৎ পাহাড়ি ঢলে স্মৃতি আক্তার, হাসান চৌধুরী শুভ ও শেখ জুবাইরুল ইসলাম নিখোঁজ হন। পরে ১২ ও ১৩ জুন দু’জনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে হাসান চৌধুরী এখনও নিখোঁজ। যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা, আবহাওয়ার সতর্কতা এবং প্রশাসনিক অনুমতি ছাড়া ভ্রমণ আয়োজনের ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মামলায় বর্ষা ইসলামসহ সংশ্লিষ্টদের গাফিলতিকে মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
নাম না প্রকাশের শর্তে আলীকদম উপজেলার কয়েকজন গাইড টিবিএসকে জানান, ৯ জুন ‘ট্যুর এক্সপার্ট’ নামে ৩৩ জনের একটি পর্যটক দল দুজন গাইড নিয়ে থানচি-আলীকদমের মাঝখানে ক্রিসতং পাহাড় ও থানচির সাকাহাফং পাহাড়ে বেড়াতে যায়। দলের নেতৃত্বে ছিলেন বর্ষা ইসলাম নামে এক নারী ট্যুর অপারেটর। সহ-সমন্বয়ক ছিলেন হাসান চৌধুরী। দলটি দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যাত্রা করে- একটি ২২ জন, অন্যটিতে ১১ জন সদস্য ছিলেন। ২২ সদস্যের দলটি পাহাড়ি ঝিরি পার হওয়ার সময় দলের তিনজন- দুই পর্যটক এবং ট্যুর অপারেটর প্রবল স্রোতে ভেসে যান। তার মধ্যে শেখ জুবাইরুল ইসলাম ও স্মৃতি আক্তারের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন মো. হাসান চৌধুরী।