বনাঞ্চল সুন্দরবনে বন্যপ্রাণী শিকার, নিষিদ্ধ সময়ে মাছ আহরণ বন্ধ করাসহ প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেছে বন বিভাগ। ঈদুল আজহার ছুটিতে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের আওতাধীন শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের আকাশে আধুনিক প্রযুক্তির ড্রোন উড়িয়ে বন অপরাধ পর্যবেক্ষণ শুরু হয়। গত ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস সুন্দরবনে বাঘ হরিণসহ বন্যপ্রাণী ও মাছের প্রজনন মৌসুমে সব নদ-নদী খালে মাছ ও মধু আহরণ এবং দেশি-বিদেশি পর্যটক প্রবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে। ড্রোন ব্যবহার করে এসব পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং ধরা পড়ছে বন অপরাধীরা।
সুন্দরবন বিভাগ জানায়, ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহারের সুফল মিলতে শুরু করেছে। গত বৃহস্পতিবার বিকালে চাঁদপাই রেঞ্জের ঝাপসী বন টহল ফাঁড়ির আওতাধীন গহীন অরণ্যের বয়ারশিং ও শিসা খালে ড্রোন উড়িয়ে দুটি নৌকাসহ কয়েকজন জেলেকে শনাক্ত করা হয়। এরপর সুন্দরবনের স্মার্ট পেট্রোলিং টিমের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালে অনুপ্রেবেশকারী জেলেরা দুটি নৌকা ফেলে গহীন অরণ্যে পালিয়ে যায়। নৌকা দুটিতে তল্লাশি করে বনে প্রবেশ নিষিদ্ধ সময়ে আহরণ করা বিপুল পরিমাণ মাছ ও একটি বিষের বোতল জব্দ করে বনরক্ষীরা। অবৈধ উপায়ে এই বনে মাছ আহরণ করতে ঢোকা এসব জেলেকে ধরতে এখন চিরুনি অভিযান শুরু করা হয়েছে।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করে বাসসকে জানান, ঈদুল আজহার ছুটি থেকে প্রথমবার পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের আকাশে আধুনিক প্রযুক্তির ড্রোন উড়িয়ে বন অপরাধ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এতে সুফলও মিলেছে। তবে নিষিদ্ধ সময় শেষ হবার পর খালে বিষ দিয়ে মাছ আহরণ ও চোরা শিকারিদের তৎপরতা বন্ধ রীতিমতো কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। সুন্দরবন সন্নিহিত এলাকার যেসব মৎস্য আড়তদার দাদন দিয়ে দরিদ্র জেলেদের হাতে কার্টুন ভর্তি বিষের বোতল তুলে দিচ্ছে তাদের চিহ্নিত করা ও এসব আড়তদারের মাছ ল্যাবে পাঠিয়ে টেষ্ট করে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিলেই বিষ দিয়ে মাছ আহরণ নিয়ন্ত্রণে আসবে বলেও জানান এই বন কর্মকর্তা।