বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ বাধা দূরীকরণ, বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর এবং অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছেন ভিয়েতনামের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক ডেপুটি মিনিস্টার ফ্যান থি থ্যাং। গতকাল রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (এফবিসিসিআই) আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ- ভিয়েতনাম বিজনেস ফোরাম ২০২৫’-এ তিনি এসব কথা বলেন। ফোরামে অংশগ্রহণ করে ভিয়েতনামের ১৬ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল, যার নেতৃত্ব দেন ডেপুটি মিনিস্টার ফ্যান থি থ্যাং।
তিনি বলেন, কৃষি, পর্যটন, ফার্মাসিউটিক্যাল, মৎস্য এবং তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে বিপুল বাণিজ্য সম্ভাবনা রয়েছে। তবে উভয় দেশ একে অন্যের পণ্যের ওপর উচ্চ হারে ট্যারিফ আরোপ করে রেখেছে, যা বাণিজ্য প্রবাহে বড় বাধা সৃষ্টি করছে। ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ বাধা দূর করার পাশাপাশি পরিবহন, যোগাযোগ এবং লজিস্টিকস খাত সহজ করা গেলে উভয় দেশের অনাবিষ্কৃত খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সম্ভব বলে তিনি মত দেন।
ডেপুটি মিনিস্টার আরও বলেন, তথ্য বিনিময় ও পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর মাধ্যমে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করা প্রয়োজন। এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুর রহিম খানও বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ প্রতিবন্ধকতা দূর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, দ্বিপাক্ষিক লেনদেন পদ্ধতি সহজ হলে ব্যবসার গতি বাড়বে। ফোরামের উদ্বোধনী বক্তব্যে এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে যে বিপুল বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা রয়েছে, তার একটি বড় অংশ এখনও অনাবিষ্কৃত। অবকাঠামো উন্নয়ন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
ঢাকায় নিযুক্ত ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত গুয়েন মান কোং বলেন, প্রযুক্তি স্থানান্তর ও কারিগরি সহযোগিতার মাধ্যমে দুই দেশের শিল্প ও বাণিজ্যে অভূতপূর্ব অগ্রগতি সম্ভব। তিনি যৌথ উদ্যোগ ও পারস্পরিক বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান। এ সময় ভিয়েতনামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ লুৎফর রহমান বলেন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক গভীর করতে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক ভিসা সহজীকরণ জরুরি। পাশাপাশি, উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ ও অংশীদারিত্ব আরও জোরদার করার আহ্বান জানান তিনি।
ভিয়েতনাম বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান ডো ভ্যান থ্রং বলেন, দুই দেশের মধ্যে যৌথ প্রকল্প ও বিনিময়মুখী সহযোগিতার মাধ্যমে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব মো. আলমগীর, সাবেক পরিচালক আব্দুল হক, নাসরিন ফাতেমা আউয়াল, ড. ফেরদৌসী রহমানসহ সংগঠনের সহায়ক কমিটির সদস্য, সাধারণ পরিষদের প্রতিনিধিরা এবং দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতারা।