গৃহায়ণ ঋণ গ্রাহকের বয়স সর্বোচ্চ ৭০ বছরের মধ্যে আদায় করতে হবে। এছাড়াও তিনবারের বেশি পুনঃতফসিল করা যাবে না এই খাতের ঋণ। দীর্ঘমেয়াদি গৃহায়ন ঋণ পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠনের ফলে ঋণ পরিশোধের প্রকৃত সময়সীমা যেন কম না পায় এবং কিস্তির পরিমাণ বৃদ্ধি না পায়, সেজন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে সম্প্রতি জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, গৃহায়নসহ যে কোনো ঋণ পুনঃতফসিল, পুনর্গঠনের সর্বোচ্চ মেয়াদ ৬ বছর পর্যন্ত নির্ধারিত রয়েছে।
ফলে, বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদি গৃহায়ণ ঋণ পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা কোনো কোনো ক্ষেত্রে ঋণের বিদ্যমান অবশিষ্ট মেয়াদ থেকে কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘমেয়াদি গৃহায়ন ঋণ পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠনের ফলে ঋণ পরিশোধের প্রকৃত সময়সীমা যেন হ্রাস না পায় এবং কিস্তির পরিমাণ বৃদ্ধি না পায়, সেজন্য নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে নগদ প্রবাহে সাময়িক সমস্যার দরুন গৃহায়ন ঋণ পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠনের ১ম, ২য় ও ৩য় দফায় যথাক্রমে ঋণের বিদ্যমান মেয়াদে ৩০ শতাংশ, ২০ শতাংশ, ১০ শতাংশ নির্ধারন করে সমুদয় ঋণ গ্রাহকের বয়স সর্বোচ্চ ৭০ বছরের মধ্যে আদায়ে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। গৃহনির্মাণ ঋণ কোনোক্রমেই সম্মিলিতভাবে ৩ বারের অধিক পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠন করা যাবে না। সম্মিলিতভাবে সর্বমোট ৩ বার পুনঃতফসিল, পুনর্গঠন করার পরও ঋণ আদায় না হলে পাওনা আদায়ে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠনের পর ন্যূনতম ৬টি মাসিক কিস্তি বা এর সমপরিমাণ অর্থ আদায় সাপেক্ষে পরবর্তী দফায় পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠন করা যাবে। বিরূপমানে (নিম্নমান, সন্দেহজনক, মন্দ বা ক্ষতি) শ্রেণিকৃত ঋণ হিসাব পুনঃতফসিল করা যাবে এবং স্ট্যান্ডার্ড অথবা এসএমএ মানে রয়েছে এরূপ ঋণ হিসাব পুনর্গঠন করা যাবে। পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠনকৃত ঋণের অর্থ মাসিক বা ত্রৈমাসিক কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য হবে। সময় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গ্রাহকের আয়ের উৎস, বর্ধিত মেয়াদকালে নগদ প্রবাহ ইত্যাদি পর্যালোচনাসহ সার্বিক ঋণ পরিশোধ সক্ষমতা যাচাই করতে হবে।
সহায়ক জামানতের বন্ধকী কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতে হবে। গৃহায়ণ ঋণ পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠনের আবেদন প্রাপ্তির পর অনধিক ২ মাসের মধ্যে তা নিষ্পন্ন করতে হবে, এতে কোনরূপ গ্রেস পিরিয়ড প্রদান করা যাবে না। আবেদন গ্রহণযোগ্য না হলে তা গ্রাহককে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে। নিয়মিত ঋণ পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে কোনরূপ ডাউনপেমেন্টের বাধ্যবাধকতা নেই। ঋণ পুনঃতফসিলের ক্ষেত্রে আবশ্যিকভাবে যে হারে ডাউনপেমেন্ট আদায় করতে হবে- প্রথম দফা পুনঃতফসিলের ক্ষেত্রে মোট বকেয়া ঋণের ২ শতাংশ; দ্বিতীয় দফা পুনঃতফসিলের ক্ষেত্রে মোট বকেয়া ঋণের ৩ শতাংশ; তৃতীয় দফা পুনঃতফসিলের ক্ষেত্রে মোট বকেয়া ঋণের ৪ শতাংশ। তবে, ঋণ, লিজ, বিনিয়োগের কিস্তি বা এর অংশ হিসেবে আদায়কৃত অর্থ ডাউনপেমেন্ট হিসেবে প্রদর্শন করা যাবে না।