দিনের শেষ ইভেন্ট মেয়েদের চার গুনিতক চারশ’ মিটার। গতকাল বুধবার জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ইভেন্টের শেষ লেপে দৌড়ে রেকর্ড গড়ে নৌবাহিনীকে স্বর্ণপদক এনে দেন দেশের দ্রুততম মানবী শিরিন আক্তার। এতেই স্টেডিয়ামজুড়ে আনন্দ-উৎসবের রোল পড়ে যায় এই বাহিনীর ক্রীড়াবিদদের মধ্য। সবাই যখন উৎসবে মাতোয়ারা, তখন স্ট্রেচারে করে শিরিনকে নিয়ে যাওয়া হয় অ্যাম্বুলেন্সে। মাসল পুল করায় অ্যাম্বুলেন্সেই চলল পরিচর্যা। না, বড় কোনো আঘাত পাননি তিনি। কিছুক্ষণ পড়ে সতীর্থদের সঙ্গে তার উৎসবে যোগ দেয়া সেটাই প্রমাণ করে। নৌবাহনীর উৎসবের কারন ভিন্ন। একটি স্বর্ণপদক পেয়ে সেনাবাহিনীর (১৯) চেয়ে এগিয়েছিল। শেষ ইভেন্টে স্বর্ণ হাতছাড়া হলে সমান হবে। তাই ২১টি স্বর্ণপদক নিশ্চিত হওয়ায় বাধভঙা আনন্দে মেতে উঠেন নৌবাহিনীর ক্রীড়াবিদরা। শিরিনময় এমন মিট অনেক দেখেছেন সমর্থকরা। ১০০ মিটার স্প্রিন্টে দেশের ১৬ বারের দ্রুততম মানবী তিনি। এর বাইরেও তিনি ২০০ মিটার স্প্রিন্ট এবং চার গুনিতক একশ’ ও চার গুনিতক চারশ’ মিটার রিলেতে দলকে স্বর্ণপদক এনে দেন। ১০০ মিটার স্প্রিন্ট এবং চার গুনিতক একশ’ মিটার রিলেতে স্বর্ণ জেতেন আগের দিন। কাল ২০০ মিটার স্প্রিন্টে স্বর্ণ জেতার (২৪.৭৪ সেকেন্ড) ঠিক ৫০ মিনিট পরই চার গুনিতক চারশ’ মিটার রিলেতে নামতে হল। শেষ ইভেন্টে নামার আগে একবার অ্যাম্বুলেন্সে গিয়ে পরিচর্যা করান। কিন্তু রিলে শেষ করার পর আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলেন না।
শিরিনের কথায়, ‘আমার মনে হচ্ছিল হাত ও পায়ের পেশিগুলো টানছিল। দাঁড়িয়ে থাকতে খুব কষ্ট হচ্ছিল। তাই স্ট্রেচারে করে অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে যেতে হয়েছিল।’ এমন শিরিনকে আর কতদিন দেখা যাবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে দ্রুততম মানবী, ‘যতদিন পারব, খেলে যাবো। যতদিন নিজের শরীর কুলাবে খেলে যাবো। এতে কোনো ক্লান্তি নেই আমার।’ এদিকে ছেলেদের ২০০ মিটার স্প্রিন্টে স্বর্ণ জিতে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলেন নৌবাহিনীল রাকিবুর হাসান। প্রথম দিন ১০০ মিটার স্প্রিন্টে সতীর্থ মো. ইসমাইলের কাছে ন্যানো সেকেন্ডে হেরে আক্ষেপ করেছিলেন তিনি। কিন্তু ২০০ মিটারে স্বর্ণ জিতে (২১.৩৯ সেকেন্ড)। সেই আক্ষেপ আর নেই তার, ‘আমি নিজেকে তৈরি করেছিলাম দ্রুততম মানব হওয়ার জন্য। সেটা পারিনি। তবে ২০০ মিটারে স্বর্ণ জেতায় সেই আক্ষেপ দূর হয়ে গেল। তবে আগামীতে চেষ্টা করব দ্রুততম মানবের খেতাব জিততে।’