ইরান-ইসরায়েলের সাম্প্রতিক ১২ দিনের যুদ্ধ থামলেও গাজা উপত্যকার মানবিক পরিস্থিতি এখনো করুণ। তবে গাজায় নতুন করে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা জেগে উঠেছে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস জানিয়েছে, মধ্যস্থতাকারীরা বর্তমানে যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় চুক্তির বিষয়ে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
বুধবার (২৫ জুন) বিবিসিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে হামাসের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা এখন গতি পেয়েছে। অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ দাবি করেছেন, হামাস ও ইসরায়েল একটি চুক্তির 'খুব কাছাকাছি' পৌঁছেছে। ট্রাম্পও এ প্রসঙ্গে বলেছেন, 'গাজা নিয়ে বড় অগ্রগতি হয়েছে।'
এই আলোচনার মধ্যে বুধবার সকালে ইসরায়েলের বিমান হামলায় অন্তত ৪৫ ফিলিস্তিনি নিহত হন, যাদের অনেকে ত্রাণ সংগ্রহের অপেক্ষায় ছিলেন। হামাস বলছে, ইসরায়েলের হামলা সত্ত্বেও তারা যুদ্ধবিরতির আলোচনায় আগ্রহী। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, একই দিন হামাসের একটি হামলায় তাদের সাত সেনা নিহত হয়।
একইসঙ্গে, গাজায় চালু হওয়া যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত 'গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচটি)' নতুন ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থার মাধ্যমে সহায়তা দিচ্ছে বলে দাবি করলেও জাতিসংঘসহ একাধিক মানবাধিকার সংস্থা এ ব্যবস্থাকে মানবিক নীতিমালার পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জিএইচটির কার্যক্রম চলাকালে ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ৫৪৯ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও অন্তত চার হাজার।
গাজায় চলমান হামলা এবং পাল্টা আক্রমণে বাড়ছে ইসরায়েলি সরকারপ্রধান বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর চাপ। ইসরায়েলি পার্লামেন্টের শরিক দল ইউনাইটেড টোরাহ জুডাইয়াজমের নেতা মোশে গাফনি প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুলেছেন— 'আমরা কীসের জন্য লড়াই করছি, যখন আমাদের সেনারা প্রতিদিন মারা যাচ্ছে?'
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলায় ইসরায়েলে ১,২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর পরপরই ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে, যার ফলে এখন পর্যন্ত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬ হাজার ১৫৭ জনে।