ঢাকা রোববার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

‘আমি খুব আশাবাদী এবং ভীষণ রোমাঞ্চিত’

‘আমি খুব আশাবাদী এবং ভীষণ রোমাঞ্চিত’

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে হামজাকে নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। প্রথমবারের মতো লাল সবুজের জার্সিতে মাঠ মাতাবেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা প্রবাসী কোন বাংলাদেশি ফুটবলার। ইংল্যান্ড ফুটবল দলে ডাক পেলে কি করতেন হামজা চৌধুরী? বুধবার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে হামজার কৌশলী উত্তর, ‘আমি পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেই নিজের দেশের পক্ষে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইংল্যান্ডের হয়ে কখনো ডাক পাইনি। ওই সুযোগ তাই আমার আসেনি। সুতরাং সিদ্ধান্তও নিতে হয়নি। তবে সুযোগ আসলে অবশ্যই পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করতাম। বাংলাদেশে খেলতে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা উৎসাহিত করেছে।’ বাংলাদেশ দলে খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকে ইংল্যান্ডের বিভিন্ন ক্লাবে খেলা সতীর্থ, কোচ ও বন্ধুরা অভিনন্দন জানাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন হামজা।

আঞ্চলিক বাংলা ভাষায় (মুখে হাসি নিয়ে) তিনি বলেন, ‘ফ্রেন্ড, কোচের থেইকা মেসেজ পাইছি। তারা কনগ্রাচুলেট করতাছে। তারা পজিটিভ মেসেজ দিতাছে। আমার পরিবার খুব গর্বিত। হাজার মানুষ এসে আমারে দেখতাছে, কনগ্রাচুলেশন দিতাছে।’ নানা ধাপ পেরিয়ে বাংলাদেশ দলে খেলার অনুমতি পেয়েছেন হামজা। এ প্রসঙ্গে তার কথা, ‘কয়েক বছর ধরেই আলোচনা হচ্ছিল। সবশেষ নতুন (বাফুফে) প্রেসিডেন্ট তাবিথ আউয়াল আলোচনা শুরু করেন। পরিকল্পনার কথা জানান। কোচের সঙ্গ কথা হয়। আমার মনে হয়েছে, এই দলটা সাফল্য পেতে চাই। আমারও পরিবার নিয়ে এখানে আসতে খুব ভালো লাগে। কোচ ও প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলার পর আত্মবিশ্বাস পাই।’ ভারত ম্যাচ নিয়ে হামজা বলেন, ‘আমি মনে করি, ফুটবলে যেকোনো কিছু হতে পারে। ভারত ম্যাচকে ঘিরে ভালোভাবে প্রস্তুত হচ্ছে বাংলাদেশ। আমি কোন চাপ অনুভব করছি না। এখানে এসে আমি অনেক ভালোবাসা পাচ্ছি। আমি ম্যাচটা খেলতে চাই এবং যতটা সম্ভব দলকে সহায়তা করতে চাই।’ বাংলাদেশের হার-জিতের সঙ্গে আপনার হার-জিত জড়িত, বিষয়টি অতিরিক্ত চাপের কিনা আপনার জন্য- এমন প্রশ্নের উত্তরে শুরুতেই তিনি দিলেন ‘না’ সূচক উত্তর। নির্ভার থেকে জাতীয় দলে খেলবেন হামজা, ‘না, আমি তা মনে করি না। আমি মনে করি, দিন শেষে আমরা একটা ফুটবল ম্যাচই খেলছি। সেখানে যেকোনো কিছুই হতে পারে। কোচ বলেছেন, এরই মধ্যে তিনি প্রস্তুতি নিয়েছেন, আমি এখানে এসেছি, আমি যা পারি, তা দলে যুক্ত করার জন্য। আমি কোনো চাপ অনুভব করছি না, আমি অনেক ভালোবাসা অনুভব করছি। আমার দিক থেকে, আমি চেষ্টা করব, যতটা সম্ভব দলের উন্নতিতে সহায়তা করার।’ দলকে নিয়ে বেশ আশাবাদী এই মিডফিল্ডার, ‘(নিজের কাছেও) আমার কোনও প্রত্যাশা নেই। তবে আমি খুব আশাবাদী এবং ভীষণ রোমাঞ্চিত। কয়েক সপ্তাহ ধরে কোচ এটা নিয়ে কথা বলেছেন, অনেক ভিডিও ক্লিপ দেখিয়েছেন, দলের ট্যাকটিক্যাল দিক এবং দল যেভাবে আক্রমণ করে তা দেখে বিস্মিত হয়েছি। আমি আশা করছি, দলে আমি কিছু যোগ করতে পারবো। আমার কোনো প্রত্যাশা নেই। আমি ভিন্ন একটা লিগ থেকে এসেছি, ভিন্ন ঘরানার ফুটবল খেলি। এই ছেলেরা, যেমন জামাল আছে, সে দলের অধিনায়ক, আন্তর্জাতিক ফুটবলে অনেক বেশি অভিজ্ঞ, এখানে অনেক দিন ধরে আছে। আমি এখানে তাদের কাছ থেকেও শিখতে পারব। যেটা বলছিলাম, ইনশাআল্লাহ আমরা সফল হবো। আর আমরা একবারে একটা পদক্ষেপ ফেলতে চাই।’ কোচের কৌশলে সন্তুষ্ট হামজা। ভারত ম্যাচের প্রস্তুতি নিয়েও চিন্তিত নন তিনি। হাভিয়ের কাবরেরার ট্যাকটিকস নিয়েও আত্মবিশ্বাসী, ‘খুবই আত্মবিশ্বাসী (কোচের কৌশল নিয়ে)। খুব, খুব আত্মবিশ্বাসী। আগেও যেটা বললাম, দল কী করে, এর অনেক ভিডিও ক্লিপ তিনি আমাকে দেখিয়েছেন। তার ভাবনার কথা বলেছেন। আমি এর অংশ হতে দলকে সাহায্য করতে উন্মুখ।’ ভারতের বিপক্ষে ভালো কিছু দেখা যাবে আশা তার, ‘(প্রস্তুতি ম্যাচ না খেলা নিয়ে) আমি মনে করি, কোচ এবং সভাপতিই সবচেয়ে ভালো জানেন। তাদের সিদ্ধান্তগুলো হয় দলের সবচেয়ে ভালোর জন্যই। আপনি যেমন বললেন, উন্মাদনা ছিল। পর্দার আড়ালে দল কঠোর পরিশ্রম করছে। তাই এটা হয়তো ভালো হয়েছে যে আমি স্পটলাইট ওদের থেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছি। তারা কতটা পরিশ্রম করছে এবং কতটা ভালো করছে সেটা ২৫ তারিখেই আপনারা দেখবেন।’ সাবেক ক্লাব লিস্টার সিটি ও বাংলাদেশের মধ্যে মিল খুঁজে পান হামজা, ‘হ্যাঁ, অনেকটাই (লেস্টার সিটি ও বাংলাদেশের মিল)। অবশ্যই, যখন সময় আসবে, আমি আমার অভিজ্ঞতা এবং গল্প ভাগাভাগি করব। যেটা বলছিলাম, লিস্টারের গল্প অন্যরকম গল্প। তবে একটা জাতি হিসেবে আমরাও দারুণ, আমাদেরও সম্ভাবনা আছে, আমরাও কিছু অর্জন করতে পারি, এজন্য আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, প্রক্রিয়াগুলো অনুসরণ করতে হবে। তাড়াহুড়োর কিছু নেই। ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশের হয়ে অনেক বছর খেলবো আমি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত