ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ব্যর্থতা সরিয়ে ফুটবলকে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি

ব্যর্থতা সরিয়ে ফুটবলকে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি হিসেবে এখনও এক বছর পুর্তি হয়নি তাবিথ আউয়ালের। এই অল্প সময়ে ব্যর্থতা যেমন রয়েছে, তেমনি কিছু সফলতাও আছে। এসবের পরিসংখ্যান জানাতে এবং আগামীর কর্ম পরিকল্পনা তুলে ধরতেই ‘মিট দ্য প্রেস’ আয়োজন করেছিল দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রা সংস্থা। নির্বাচনের আট মাস পর বাফুফের সভাপতি তাবিথ আউয়াল কথা বললেন তার দায়িত্বের সাফল্য নিয়ে। আবার অকপটে স্বীকার করলেন নিজের ব্যর্থতাও। দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতিও দিলেন। পাশাপাশি সরকারের কাছে কিছু দাবি-দাওয়াও তুলে ধরলেন।

গতকাল শনিবার রাজধানীর রাওয়া ক্লাবে অনুষ্ঠিত হল ব্যাতিক্রমী এক আয়োজন। সেখানেই ক্রীড়াঙ্গনে সরকারের বরাদ্দ ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের বিষয়টি তুলে ধরে বাফুফে প্রধান কথা বলা শুরু করেন। বাস্তব প্রেক্ষাপট তুলে ধরে দেখিয়ে দেন এই বরাদ্দ প্রয়োজনের তুলনায় যৎসামান্য। ‘নির্বাচনের পর এই আট মাসের সফলতা বা ব্যর্থতা তুলে ধরার জন্য এই আয়োজন। আমি মনে করি, জবাবদিহিতা থাকা গুরুত্বপূর্ণ। ছয় মাস পরপর এমন আয়োজন হলে জবাবদিহিতা থাকে। দেখুন, বাজেটে ক্রীড়াক্ষেত্রের বরাদ্দ নিয়ে তেমন কথা হয় না। ২ হাজার কোটি টাকার যে বরাদ্দ দেয়া হয়, তার নয়শ কোটি চলে যায় বেতন ও মেইন্টেনেন্স, অপরারেশনাল ও অন্যান্য বিষয়ে। বাকিটা উন্নয়নমূলক কাজে লাগে। অনেক কাঠামো পুরোনো, অকেজো, এখানে সংস্কার কাজ করে, মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে আর কতদিন! আমার মনে হয়, পুরোনো কাঠামোগুলো ভেঙে নতুন করে তৈরি করলে ক্রীড়াঙ্গনের জন্য কাজে আসবে। ক্রীড়া পণ্যের ক্ষেত্রে ৩৬ শতাংশ ট্যাক্স আমাদের দেশে, এটা যেন বিবেচনা করা হয়। মওকুফ করা হয় বা কমানো হয়। ভারতে এই ট্যাক্স মাত্র ১২ শতাংশ।’

সারা দেশে বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টগুলো আয়োজনের সফলতা থাকলেও তাবিথ স্বীকার করে নিয়েছেন, জেলাভিত্তিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পারেননি নানা সীমাবদ্ধতায়। ‘ফুটবলেকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়ার কাজ শুরু করেছি। চরে, পাহাড়ে, সৈকতে, রাস্তায় এবং অবশ্যই মাঠে বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতা হয়েছে। অনূর্ধ্ব-১৪ ফুটবল চলছে। ইয়ুথ ডেভেলপমেন্টে জোর দেয়া হয়েছে। জেলা ফুটবল আমরা চালু করতে পারিনি। এমন নয় যে, বিষয়টা আমরা এড়িয়ে গেছি, আমরা চেয়েছি বয়সভিত্তিক দিয়ে শুরু করতে। এরপর ধাপে ধাপে জেলা, আন্তঃজেলা শুরু করতে চাই।’

সাম্প্রতিক সময়ে শক্তিশালী জর্ডান ও ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে মেয়েদের খেলার প্রসঙ্গও টেনেছেন বাফুফে সভাপতি। সেখানে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের আগে জামাল-হামজারা খেলেছেন সমমানের দল ভুটানের বিপক্ষে। তাতে নিজেদের শক্তি-দুর্বলতা সম্পর্কে মেলেনি স্বচ্ছ ধারণা। সিঙ্গাপুরের কাছে হারতে হয়েছে ২-১ গোলে। পুরুষ দলের জন্যও প্রীতি ম্যাচে শক্ত প্রতিপক্ষ চান তাবিথ। ‘নারীরা অনেক দিন পরে অনেক বড় দলের সঙ্গে খেলছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে খেলেছে। ত্রিদেশীয় সিরিজে জর্ডান ও ইন্দোনেশিয়া যারা র‌্যাঙ্কিংয়ে অনেক এগিয়ে, তাদের সঙ্গে খেলেছি, ড্র করেছি। জর্ডানের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও ড্র করেছে। এতে করে মেয়েদের মানসিক শক্তি বাড়ছে। আগামী সাড়ে তিন বছর এগুলো নিয়ে কাজ চালিয়ে যাব।’ বাফুফে সভাপতি বলেন, ‘ফ্রেন্ডলি ম্যাচের ক্ষেত্রে (পুরুষ দল নিয়ে) আমাদের ভাবনা আরও শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে খেলা, যাতে দল আরও উন্নতি করতে পারে। এখন আমরা এশিয়ান কাপের জন্য লড়াই করছি। ভবিষ্যতে অলিম্পিক কোয়ালিফায়ার আসবে, বিশ্বকাপ বাছাই আসবে, সেক্ষেত্রে প্রস্তুত হওয়ার জন্য ওই মানের দলের বিপক্ষে খেলতে হবে।’ প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে বলতে গিয়ে বাফুফে সভাপতি স্বীকার করে নিয়েছেন নিম্ন মানের মাঠে প্রিমিয়ার লিগের খেলাগুলো আয়োজনের। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সামনের দিনগুলোতে এই দিকের উন্নতিতে। ‘আমাদের মাঠগুলো আমাদের চাওয়া অনুযায়ী উন্নত করতে পারিনি।

জাতীয় স্টেডিয়াম আমরা ফিরে পেয়েছি। কিন্তু যে স্টেডিয়ামগুলো আমরা পেয়েছি লিগ চালানোর জন্য, চর্চা করার জন্য, সেগুলোর (মানের) কমতি আছে, সেটা আমরা মানি এবং স্বীকার করি। তবে আশা করি, আগামী ছয় মাসের মধ্যে এসব ক্ষেত্রে আমরা আপনাদের উন্নতি দেখাতে পারব।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের খেলা, মাঠ, জার্সি, ইকুয়েপমেন্ট ‘নিম্নমানের’ ছিল বলে অভিযোগ ছিল, সেখানেও আমরা উন্নতি করছি। এখন আমাদের চাওয়া বাংলাদেশ দল যখন মাঠে নামবে, তখন যেন পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারে, সেই উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত