ঢাকা সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সুফিকোষ

মহবয়ত-ই ইসমে আযম

খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (রহ.)
মহবয়ত-ই ইসমে আযম

ইসমে আযম বা মহানাম, শক্তির আধার শক্তিময়ের গুণ। এর মাঝে লুকায়িত আছে মহাশক্তি। অসাধ্য সাধন করা যায় ইসমে আযম আমল দ্বারা। কি এই ইসমে আযম? কোথায় আছে ইসমে আযম? এই বিষয়ে হাদীসে বিভিন্ন বর্ণনা ও কিতাবে আলোচনা বিবৃত হয়েছে। সাকুল্যে ১০টি মত পাওয়া গেলেও এর সুরাহা হয়নি।

ইসমে আযম সম্পর্কে কুতবুল আকতাব গাউছে জমান আরেফ বিল্লাহ হজরত শাহ ছূফী খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (রহ.) ‘আমার জীবন ধারা’ গ্রন্থে লিখেছেন- ‘মহবয়তের সহিত যেই নামই ডাকিবে তাহাই ইসমে আযম।’ (কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত নবী-রসূল (আ.) গণের দোয়া ও মুনাজাত, ড. মাওলানা রফিকুল ইসলাম ও মুফতী শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী, পৃষ্ঠা: ২৫৫-২৫ ‘প্রকৃত মহবয়ত তাহারই নাম যাহাতে বস্তুর হাকিকত ফানা হইয়া যায়। যে ব্যক্তি মহবয়তের আবেগে আলেখ্যকে চুম্বন করে, প্রকৃতপক্ষে সে আলেখ্য স্থিতিকে চুম্বন করে না, সে চুম্বন করে স্বীয় মহবয়তের অক্ছকে। যখন মহবয়তের গলবা জেয়াদা হয়, তখন আশেক প্রিয় বস্তুতে স্বীয় এশকের প্রভাব প্রতিফলিত দেখে। এইজন্য বলা হয় যে, এশক আশেকের আকার ধারণ করিয়া মাশুককে বরণ করে। প্রকৃতপক্ষে সবই এশকের খেলা, সবই সেই মহাপ্রভুর লীলা। এখানে জায়েজ না-জায়েজের ঝগড়া আসিতে পারে না। অদ্যকার পত্র কত পূবর্য়ভাব জাগাইয়া দিল! আবার আমি তোমাদের স্মৃতি মধ্যে উপস্থিত হইলাম। চিন্তা কিসের? দূরত্ব নৈকট্য হইতে কি মঙ্গলকর নহে?

দূরত্ব কাহাকে বলে? যাহা দেখিতে পাও না, সেই কি দূর? না, যাহা অনুভবে আসে না, সেই দূর? যে নিকটে সেই যে দূরে, তাহা কেন বুঝ না? ভালোবাসা কি দ্বিতীয়? প্রকৃত ভালোবাসায় দুয়ী নাই। যেখানে দুয়ী আসে, সেখানে বাস্তবতা নাই। প্রেমময় প্রেম লইয়া খেলা করিতে ভালোবাসেন। তিনি যাহার উপর দয়া করেন, তাহাতেই আপন শক্তি ফুঁকিয়ে দেন এবং তাহারই প্রভাবে আশেক-মাশুক মাতোয়ারা হয়। তাই বলি, প্রেম কখনো আশেকের আকার এবং কখনো মাশুকের আকার ধারণ করে। জানিবে বাহার মেঘের নহে, বাহার বিদ্যুতের। বিদ্যুৎ মেঘে প্রবেশ করিয়া তাহাকে আলোড়িত করে, কত রঙে রবিত করে এবং এক মেঘ হইতে অন্য মেঘে প্রবেশ করে, আবার স্থানে ফিরিয়া আসে। আকর্ষণই প্রকৃত, বস্তু অপ্রকৃত। আকর্ষণকে পূজা করিবে, বস্তুকে পূজা করিবে না। আকর্ষণে দূরত্ব নাই, দূরত্ব বস্তুতে। বুঝিলে ত? আবার ঈদ আসিলে বুঝিবে, এসব কথা অনুভব করিবার, তর্ক করিবার নহে। দূরত্ব আমরা পয়দা করি, কলবের আকর্ষণ যতই কমে, দূরত্ব ততই বাড়ে। বল দেখি দয়াময় কোন্ ব¯' হইতে দূর? বল ত, মধ্যাকর্ষণ পৃথিবীর কোন বস্তুতে নাই? যাহারা আকর্ষণ বুঝে না, তাহারাই দূরত্ব মনে করে। আকর্ষণ কি কখনও দূরত্বজ্ঞাপক? আকর্ষণকে স্থায়ী কর, দূরত্ব ঘুচিয়া যাইবে।

বি. দ্র : লেখকের বানান হুবহু রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত