ঢাকা শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ছিনতাই পরিষ্কার হারাম

জুবাইর ইসলাম মাবরুর
ছিনতাই পরিষ্কার হারাম

চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই করে উপার্জন করা মহাপাপ। এটা সভ্য মানুষের পেশা হতে পারে না। কোনো ঈমানদার ব্যক্তি এসব হীন কাজে জড়িত হতে পারে না। স্বপেশা হিসেবে কিংবা কারো প্ররোচনায় এসব কাজ করা মারাত্মক ভুল সিদ্ধান্ত। সাধারণত এ দেশের সমাজব্যবস্থায় ছিনতাই ও মাদকতা একটি অপরটির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। কখনো তা রাজনৈতিক ইস্যুও হতে পারে। এ ধরনের অপকর্ম সমাজ ও রাষ্ট্রের ভিতকে নড়বড়ে করে তোলে। স্থিতিশীল পরিবেশকে অস্থিতিশীলতায় রূপান্তর করে। বোদ্ধামহলে এ জাতীয় কাজ কখনো কাম্য নয়।

অন্যায়ভাবে জোরপূর্বক অন্যের সম্পদ ছিনিয়ে নেয়াকে ছিনতাই বলে। আজকাল ছিনতাইপ্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। শহর-গ্রাম সর্বত্র ছিনতাই হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জোরদার করার পরও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে অহরহ। ছিনতাই নিরাপদ জীবন ও শান্তিপূর্ণ সমাজব্যবস্থাকে বিপন্ন করে। তাই ইসলাম ছিনতাইকে জোরালোভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমরা একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ করো না এবং এ উদ্দেশ্যে বিচারকের কাছে এমন কোনো মামলা করো না যে মানুষের সম্পদ থেকে কোনো অংশ জেনেশুনে গ্রাস করার গোনাহে লিপ্ত হবে।’ (সুরা : বাকারা : ১৮৮)। ছিনতাইকারীর ব্যাপারে নবী (সা.) হুঁশিয়ারি ঘোষণা করে বলেন, ‘যে ব্যক্তি অন্যের মাল ছিনতাই করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ (আবু দাউদ : ৪৩৪০ ইফা.)।

ছিনতাইকারীর শাস্তি : ছিনতাইকারীরা পথেঘাটে বিরক্ত করলে জনগণ বিরক্ত হয়ে ছিনতাইকারীর প্রাণনাশ করতে পারে না। ছিনতাইকারীদের ক্ষতি থেকে নিজেও বাঁচতে হবে। ছিনতাইকারীদেরও এ পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। জেদেরবশে ছিনতাইকারীকে আঘাত করে শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা অনুচিত। তাদের আইনের হাতে সোপর্দ করে দেয়া বাঞ্ছনীয়। এটা হলো স্বাভাবিক মানবিকতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার দাবি। তবে ইসলাম ছিনতাইকারীর শাস্তির ব্যাপারে কী বলে? পবিত্র কোরআনের ভাষ্য মতে, সম্পদ আত্মসাৎকারী বা ছিনতাইকারী নিঃসন্দেহে কবিরা গোনাহগার ও মহাপাপী এবং তার জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (শূরা : ৪২; মুতাফফিফীন : ১-৬)। আদালতে বিচারক তাদের অপরাধের মাত্রা অনুপাতে শাস্তি নির্ধারণ করবেন। সেটি জেল বা জরিমানা বা উভয়টি হতে পারে। কিন্তু ইসলামি সকল বিদ্বানদের ঐকমত্যে তার হাত কাটা যাবে না (ইবনু কুদামাহ, মুগনী ১২/৪১৬)। কেননা, রাসূল (সা.) বলেন, ‘লুণ্ঠনকারী, ছিনতাইকারী ও আত্মসাৎকারীর হাত কর্তন করা হবে না’ (দারেমি : ২৩৭৬; সহিহুল জামে‘ : ৫৪০২)।

তিনি আরো বলেন, ‘যে ব্যক্তি অন্যের মাল ছিনতাই করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়’ (আহমাদ: ১৫১১২; মিশকাত : ৩৫৯৬)।

হাসান বসরি ও ইয়াস বিন মু‘আবিয়ার মাঝে ছিনতাইকারীর হাত কাটা নিয়ে মতপার্থক্য দেখা দিলে তারা খলিফা ওমর বিন আব্দুল আযিযের নিকট পত্র প্রেরণ করেন। তিনি উত্তরে লিখেন ছিনতাইকারীর হাত কাটা যাবে না। বরং তার পিঠে চাবুক মার এবং তাকে বন্দি কর। (মুসাান্নাফ ইবনু আবি শায়বাহ : ২৮৬৬৫)।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত