চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে গভীর রাতে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে শুরু হওয়া আগুনে দিনমজুরসহ নিঃস্ব হয়েছে কয়েকটি পরিবার। উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের ডাটরা কাজী বাড়ীতে শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সরকারি প্রাথমিক অনুদানের বিষয়ে আশ্বস্ত করেন।
জানা যায়, ডাটরা শিবপুর কাজী বাড়ীর মৃত আব্দুল বারেক মাস্টারের দুই ছেলে—বাবুল ও বিপুলের দুইটি বসতঘর ও দুইটি রান্নাঘরসহ মোট ৬টি ঘরে থাকা আসবাবপত্র, তৈজসপত্র, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা আগুনে পুড়ে প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এদিন রাতে বিপুলের বসতঘরে আগুন লাগে এবং ঘরে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে বাবুলের বসতঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। দুই পরিবারের সদস্যদের ডাক-চিৎকারে আশপাশের মানুষ ছুটে আসে এবং মসজিদে মাইকিং করে এলাকার লোকজনকে আগুনের খবর জানান।
স্থানীয়রা দ্রুত আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন এবং হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। কিন্তু আগুনের ভয়াবহতায় বসতঘরের কাছে কেউ যেতে পারায় চারটি ঘর সম্পূর্ণভাবে পুড়ে ভস্মীভূত হয়। ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে।
স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলেও তারা সময়মতো উপস্থিত হননি।
ক্ষতিগ্রস্ত বাবুল ও বিপুলের পরিবারের সদস্যরা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “জীবন নিয়ে কোনোমতে ঘর থেকে বের হয়েছি। পরনের কাপড় ছাড়া আমাদের আর কিছুই রইলো না।”
গন্ধর্ব্যপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন বাচ্চু বলেন, “আগুনে সবকিছু পুড়ে দুইটি পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। বিষয়টি আমি ইউএনও মহোদয়কে জানিয়েছি।”
হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. বাহার উদ্দিন জানান, রাত ৩টার দিকে একজন ভদ্রলোক ফোন দিয়ে আগুন নিভে যাওয়ার খবর দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আমাদেরকে একাধিকবার ফোন করলে বলা হয়, আপনাদের আসার দরকার নেই। আগুন নিভে গেছে। আগুনে পুড়ে যাওয়ার কোনো খবর পাইনি। তবে কোন সংবাদ পেলে যতো প্রতিবন্ধকতাই থাকুক, তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছানো হবে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইবনে আল জায়েদ হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।
