ঢাকা ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৬ ফাল্গুন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আ.লীগ নেতা ফারুক হত্যায় দুজনের যাবজ্জীবন

আ.লীগ নেতা ফারুক হত্যায় দুজনের যাবজ্জীবন

দীর্ঘ এক যুগ পর টাঙ্গাইলের ব্যাপক চাঞ্চল্যকর আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। বহুল আলোচিত ওই মামলার রায়ে দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অন্য ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মোহাম্মদ আলী ও কবির হোসেন। তারা জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন। গতকাল টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মাহমুদুল হাসান জনাকীর্ণ আদালতে ওই রায় ঘোষণা করেন। মামলায় খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানা, তার ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সানিয়াত খান বাপ্পা, বাবু সওদাগর, আলমগীর হোসেন চাঁন, নাছির উদ্দিন নুরু, ছানোয়ার হোসেন ছানু, মাসুদুর রহমান মাসুদ এবং ফরিদ আহম্মেদ। মামলা চলাকালে অপর দুই আসামি আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ সমীর কারাগারে মৃত্যুবরণ করেন। এরআগে এদিন বেলা ১২টার দিকে রায় ঘোষণা করতে গেলে উভয়পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল বাঁধে। পরে একই দিন বিকাল ৩টার দিকে আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মাহমুদুল হাসান রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মোহাম্মদ আলী ও কবির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্ত টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সহিদুর রহমান খান মুক্তি অন্য একটি মামলায় জেলহাজতে থাকায় সেখান থেকে তাকে আদালতে আনা হয়। রায় ঘোষণার পর আবার তাকে জেলহাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। খালাসের পর সহিদুর রহমান খান মুক্তি তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি। এজন্য মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।আসামি পক্ষের আইনজীবী নাছির উদ্দিন খান নাছির জানান, আদালত ন্যায় বিচার করেছেন। রায়ে আমরা খুশি। যে সময়ে ঘটনা দেখানো হয়েছে- ওই সময় টাঙ্গাইল-৩ আসনের এমপি আমানুর রহমান খান রানা ঘাটাইলের একটি সংবর্ধনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি চিকিৎসার্থে সস্ত্রীক ভারতে, জাহিদুর রহমান খান কাকন ব্যবসায়িক কাজে মালয়েশিয়াতে অবস্থান করছিলেন এবং সানিয়াত খান বাপ্পা জেলা ছাত্রলীগ কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। চারজন সাক্ষী তাদের জবানীতে সানিয়াত খান বাপ্পা তাদের সঙ্গে ছাত্রলীগ কার্যালয়ে তাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত কৌঁসুলি (এপিপি) মোহাম্মদ সাইদুর রহমান জানান, মামলার রায়ে আদালত দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অন্য ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দিয়েছেন। তারা বাদী পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন। ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়ার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার তিন দিন পর ফারুকের স্ত্রী নাহার আহমদ টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্তের দায়িত্ব পায়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত