ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

দিনাজপুর শহরের ৮০ শতাংশ রাস্তা ভাঙা

দিনাজপুর শহরের ৮০ শতাংশ রাস্তা ভাঙা

দিনাজপুর শহরের প্রায় ৮০ শতাংশ রাস্তা খানাখন্দে ভরা। কোথাও গর্ত, কোথাও ভাঙা, আবার কোথাও ময়লা পানিতে পুরো সড়ক ডুবে আছে। ফলে শহরের সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

এসব পথে চলতে গিয়ে প্রতিদিন স্থানীয় বাসিন্দা, শিক্ষার্থী ও যানবাহনের চালকরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। জানা গেছে, দিনাজপুর পৌরসভা ১৯৯০ সালে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পায়। বর্তমানে এর আয়তন ২৬ দশমিক ৫ বর্গকিলোমিটার। ১২টি ওয়ার্ডে সাড়ে চার লাখের বেশি মানুষের বসবাস। পৌর এলাকায় মোট রাস্তার দৈর্ঘ্য ১৮৭ দশমিক ১৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে ১২২ কিলোমিটার পাকা আর কাঁচা রাস্তা ৪৪ কিলোমিটার। ৬ দশমিক ৭২ কিলোমিটার কংক্রিট ঢালাই (আরসিসি) এবং ছয় কিলোমিটার ইট বিছানো সড়ক রয়েছে।

দিনাজপুর পৌরসভার বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে দেখা গেছে, কোতোয়ালি থানা থেকে রামনগর লালবাগ হয়ে চাউলিয়াপট্টি পর্যন্ত রাস্তাটি খালখন্দে ভরে গেছে। এ রাস্তা দিয়ে ইজিবাইকের পাশাপাশি অন্য যানবাহন আসতে চায় না। একইভাবে মডার্ন মোড় থেকে ঘাসিপাড়া হয়ে ছয় রাস্তা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা হেঁটেও চলাচল করতে চায় না। নর্দমা আর ময়লা পানিতে এই রাস্তাটি প্রায় সময় ডুবে থাকে।

এছাড়া উত্তর বালুবাড়ির বেশির ভাগ রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী। শাহি মসজিদ থেকে পুরোনো শিক্ষা বোর্ড অফিস পর্যন্ত রাস্তাটি ময়লা পানি জমে পুকুরের মতো হয়ে গেছে। রেলবাজার থেকে বটতলী হয়ে রাজবাটি পর্যন্ত পুরো রাস্তাটিতে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এসব রাস্তায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

শহরের উত্তর বালুবাড়ির বাসিন্দা মোকাররম হোসেন বলেন, ‘একসময় উত্তর বালুবাড়ি এলাকাকে ভিআইপি এলাকা বলে মনে করা হতো। এখন রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে অনেকেই এই এলাকায় আসতে চান না।

এখানকার রাস্তাগুলো একেবারেই চলাচলের অনুপযোগী। বাড়ির পাশ দিয়ে দু-একজন হেঁটে গেলেও অটোরিকশা থেকে শুরু করে হালকা যানবাহন একেবারেই চলাচল অসম্ভব।’ একই এলাকার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মসজিদে নামাজ পড়তে গেলেও চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। কারণ এই রাস্তার ওপর নোংরা পানি জমে থাকে। সেই পানি ডিঙিয়ে মসজিদে যাওয়া কষ্টকর। এ রাস্তা দিয়ে স্কুল-কলেজগামী ছেলে-মেয়েরাও চলাচল করতে চায় না।’

কোতোয়ালি থানার সামনে কথা হয় ইজিবাইকচালক মোহাম্মদ রফিকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কোতোয়ালি থানা থেকে লালবাগ পর্যন্ত রাস্তায় যাত্রী নিয়ে গেলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। অটোরিকশায় বসে থাকার মতো অবস্থা থাকে না। প্রায়ই অটোরিকশা বিকল হয়ে যায়।’ আরেক চালক হায়দার আলী বলেন, দিনাজপুর শহরের বেশির ভাগ রাস্তাই খানাখন্দে ভরা। প্রতিদিন বাড়ি থেকে অটোরিকশা নিয়ে বের হলেই কোনো না কোনো যন্ত্রাংশ ভেঙে যায়। যে টাকা আয় হয় তার বেশির ভাগই গাড়ি মেরামত করতে গিয়ে শেষ হয়ে যায়।

দিনাজপুর পৌরসভার প্রশাসক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘শহরের বেশির ভাগ রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার হয় না। খানাখন্দে ভরে গেছে। অনেক রাস্তা ভেঙে গেছে। ড্রেনেজব্যবস্থা একেবারেই নাজুক। দীর্ঘদিন হয়ে গেছে রাস্তার সম্প্রসারণ হয়নি। ফলে বেশির ভাগ রাস্তা সরু হয়ে গেছে। পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা নিয়মিত কাজ করছেন। তবে রাস্তা সম্প্রসারণ, সংস্কার ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য মন্ত্রণালয়ে বেশ কয়েকবার চিঠি পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত