সংস্কারের গল্প বলে সময় ক্ষেপণের সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ। তিনি বলেন, নতুন নতুন যেসব কথা শুনছি। কখনো বলে আনুপাতিক হারে নির্বাচন, কখনো স্থানীয় সরকার নির্বাচন, এরপরে জাতীয় নির্বাচন। তারপর তারা সংস্কার করে যাবে, শেখ হাসিনার বিচার শেষ করে যাবে। এ সমস্ত কথা বলার সুযোগ নেই। তাদের সেই জায়গায়, সেই দায়িত্ব কেউ দেয়নি।
গত বুধবার নোয়াখালী মাইজদীর জেলা জজকোর্ট সড়কে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন ও দ্রুত সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে নোয়াখালী জেলা বিএনপি এ সমাবেশের আয়োজন করে।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে মানুষের মনে সন্দেহ ঢুকে গেছে। আপনাদের কথাবার্তায়, আপনাদের উপদেষ্টাদের কথাবার্তায়। মনে হয় তারা কোন এক দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে। সেই সন্দেহের উদ্বেগ যদি হয় বাংলাদেশের জনগণের কাছে আপনাদের আর কোনো গ্রহণ যোগ্যতা থাকবে না। এ দেশ পরিচালনা করতে হলে জনগণের ম্যান্ডেট নিতে হবে।
সমসাময়িক রাজনীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, যারা দীর্ঘায়িত করে লাভবান হবেন, হচ্ছেন তাদেরকে বলছি আপনারা মনে করছেন আপনারা এ সরকারের একটা অংশ হয়ে গেছেন। এ সরকারকে যতদিন রাখা যাবে তত দিনই আপনারা লাভবান থাকবেন, সরকারের অংশ হয়ে থাকবেন, এটা হওয়া সম্ভব না। যারা ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার প্রক্রিয়ার মধ্যে ঢুকেছেন। তাদেরকে বলছি পরিষ্কার করে সেই যেই হোক তাদের সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নির্বাচনের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য মানুষ ১৬ বছর ত্যাগ স্বীকার করেছে।
তিনি আরো বলেন, আজকে বাংলাদেশ এক এক দিন যাচ্ছে, এক এক দিন গণতন্ত্রবিহীনভাবে অতিবাহিত হচ্ছে। এক এক দিন যাচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক ক্ষমতা বাইরে থেকে একেক দিন যাচ্ছে। আমরা ভোট দিয়ে আমরা আমাদের সরকার দেখতে চাই। যাদের জনগণের কাছে জবাবদিহিতা থাকবে। গণতন্ত্রে জবাবদিহিতায় নির্বাচন ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পথ নেই। আমীর খসরু বলেন, বিএনপি জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে বদ্ধপরিকর। বিএনপির রাজনীতি এদেশের মানুষের ওপর নির্ভরশীল। তাদের একমাত্র দায়িত্ব আগামী দিনে দেশে জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। আর তাদের যদি সংস্কারের খুব বেশি ইচ্ছা থাকে, তাহলে তারা যে কমিশনের রিপোর্টগুলো তৈরি করেছে, সেগুলো আমরা আগামী নির্বাচত সংসদে পেশ করতে রাজি আছি।
সংসদে আলোচনা করে সবাই মিলে যেখানে সংস্কার প্রয়োজন সেটা করবে। সব চেয়ে বড় কথা হলে আমরা তো আমাদের ৩১ দফা বাস্তবায়ন করব। আমরা জাতির কাছে প্রতিজ্ঞা বদ্ধ। সংস্কারের ব্যাপারে কারো কোনো মাথাব্যথার প্রয়োজন নেই। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলোর সভাপতিত্বে সদস্য সচিব হারুনুর রশিদ আজাদের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী বরকত উল্লাহ বুলু। সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদিন ফারুক, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশীদ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য স্থানীয় সরকারবিষয় সম্পাদক বজলুল করিম আবেদ প্রমুখ।