কুষ্টিয়ার কুঠিপাড়া মডেল মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদভিত্তিক পাঠাগারে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিতরণকৃত বইয়ের তালিকায় স্থান পেয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে লেখা একাধিক বই। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক বই বিতরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আর সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তথ্য মতে, কুষ্টিয়ায় বর্তমানে আনুমানিক ২০০ থেকে ৩০০টি মসজিদ পাঠাগার পরিচালিত হচ্ছে। ২০২৩ সালে নতুনভাবে ১৯টি পাঠাগার অনুমোদন পায়। মসজিদভিত্তিক এসব পাঠাগারের জন্য ঢাকা থেকে কিছু বই পাঠানো হয়। এসব বইয়ের মধ্যেই মুজিব বচন, ইতিহাসের রক্তাক্ত ঘটনাবলী, ১৫ আগস্ট, বঙ্গবন্ধুর উক্তি সংগ্রহসহ নানা ধরনের বই অন্তর্ভুক্ত ছিল। সম্প্রতি জগতি পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের পক্ষে পাঠাগারের জন্য বই ও বুকশেলফ চাওয়া হলে, ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রদত্ত তালিকায় এসব বই দেখতে পান মসজিদের সেক্রেটারি মুস্তাফিজুর রহমান পলাশ। এর পরপরই স্থানীয়ভাবে এ নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। মুস্তাফিজুর রহমান পলাশ অভিযোগ করে বলেন, ধর্মীয় পাঠাগারে কোরআন-হাদিস সংক্রান্ত বই থাকার কথা, সেখানে বঙ্গবন্ধুর ওপর লেখা বই কীভাবে এল? আমরা গণঅভ্যূত্থানের পরে এমন রাজনৈতিক প্রভাব দেখার আশা করিনি। তিনি আরও বলেন, ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা বিষয়টি ‘চেপে যেতে’ বলেন এবং অনুরোধ করেন যেন এটি গণমাধ্যমে না আসে। একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা জানান আলিম মুজাহিদ নামে অন্য ব্যক্তি। তিনি বলেন, আমরা যখন বই নিতে যাই, তখন দেখি বান্ডিল খুলে কোরআন-হাদিসের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর বইও রয়েছে। কিছু পাঠাগারে বুক সেলফেও এসব বই আগে থেকেই রাখা ছিল। এসব বই বিতরণকে ঘিরে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের অভিযোগ করছেন অনেকেই। তারা বলছেন, ইতিহাসের নামে বিকৃত উপস্থাপনা করা হচ্ছে, যা মসজিদের মতো পবিত্র স্থানে অনুচিত। এবিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কুষ্টিয়া জেলা উপ-পরিচালক হেলালুজ্জামান বলেন, বইগুলো ২০২৩ সালে পাঠানো হয়েছিল। লোকবল সংকটের কারণে প্রতিটি বই চেক করা সম্ভব হয়নি। আরও জানান, আগামীতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে, সে বিষয়ে আমরা সতর্ক থাকবো। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সচেতন মহলের দাবি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে কেবল ধর্মীয় ও শিক্ষামূলক বই রাখাই উচিত।