চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় জঙ্গিবিরোধী অভিযান ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’ মামলায় নোয়াখালীর সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামানকে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন চৌধুরী এই নির্দেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শিবগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এসএম শাকিল হাসান তার ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষ রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিন একই আদালত তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। জানা যায়, নোয়াখালী কারাগার থেকে আসাদুজ্জামানকে শিবগঞ্জ আমলি আদালতে হাজির করা হয়। ঘটনার সময় তিনি কাউন্টার টেরেরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের এডিসি ছিলেন। আসাদুজ্জামান ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরেও নোয়াখালীর পুলিশ সুপার ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল ওদুদ বলেন, পুলিশের বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা মিলে যড়যন্ত্র করে শিবগঞ্জের একটি বাড়িতে জঙ্গি নাটক মঞ্চস্থ করে। জঙ্গি নাটকের সৃষ্টি করে আবুল কালাম আবু নামে এক মুদি দোকানিকে হত্যা করে। পরে হেলিকপ্টরে আরও তিনটি বস্তাবন্দি লাশ বের করে ওই বাড়িতে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তাদের পেটের মধ্যে বোমা বেঁধে রেখে রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা বিস্ফোরণ ঘটায়। নৃশংস এ ঘটনার সাত বছর পর ২০২৪ সালের ৩ অক্টোবর শিবগঞ্জ থানায় মামলা করেন নিহত আবুর স্ত্রী সুমাইয়া খাতুন। এই মামলা আসামি সাবেক এসপি তৎকালিন কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের এডিসি আসাদুজ্জামানকে ২ দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৬ এপ্রিল শিবগঞ্জের শিবনগর গ্রামে দুই শিশু সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন আবুল কালাম আজাদ ওরফে আবু। ঘুমিয়ে থাকা পরিবারটি কিছু বুঝে উঠার আগেই বাসার মূলফটকে তালা দেয় পুলিশ। চারিদিকে মুহুর্মুহু গুলি। সাউন্ড গ্রেনেডের বিকট শব্দ। আতকে ওঠেন গ্রামবাসী। অজানা আতঙ্কে অনেকে এদিক ওদিক ছুটোছুটি করেন। পুলিশ আবুর ঘরের দরজা, জানালা, দেয়ালে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। সেদিন এক আবুকে মারতে ২১২৬ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়। ওই অভিযানে অন্তত ১৭টি বিভিন্ন ধরনের গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়। অভিযানের নাম দেয়া হয় ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’।