ঢাকা শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

প্রবাসী কর্মীর লাশের যথাযথ ব্যবস্থাপনার তাগিদ

প্রবাসী কর্মীর  লাশের যথাযথ ব্যবস্থাপনার তাগিদ

গত বছর ১০ লাখেরও বেশি কর্মী বিদেশে গেছেন কাজের উদ্দেশে। এদের মধ্যে বেশিরভাগেরই গন্তব্য ছিল মধ্যপ্রাচ্য। গত বছর প্রবাসী কর্মী মৃত্যুর সংখ্যা এযাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ২০২৪ সালে বিদেশ থেকে প্রবাসীর লাশ এসেছে ৪ হাজার ৮১৩টি। ২০২৩ সালের তুলনায় এই সংখ্যা বেড়েছে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। প্রবাসীদের মৃত্যুর ঘটনা বেশিরভাগই ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ উল্লেখ করা হলেও এর প্রকৃত কারণ কেউ জানে না। তাই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনে দেশেই ময়নাতদন্ত করার প্রস্তাব করেছেন বক্তারা।

গতকাল রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট (রামরু) এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উদ্যোগে আয়োজিত এক সংলাপে এসব পরামর্শ উঠে আসে। ২০২২ সালের রামরু’র এক গবেষণা অনুযায়ী, ৪৮ শতাংশ পরিবার মৃত্যু সনদে দেওয়া মৃত্যুর কারণকে সঠিক মনে করেন না। তাদের এমন মনে করার পেছনে রয়েছে— শরীরে ক্ষত চিহ্ন, পরিবারের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলা ও শারীরিক নির্যাতনের তথ্য। কর্মের উদ্দেশ্যে বিদেশে গিয়ে যারা লাশ হয়ে ফিরেছেন, তাদের মৃত্যুসনদ অনুযায়ী ৩১ শতাংশ দুর্ঘটনায়, আত্মহত্যায় অথবা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে মারা গেছেন। ২০২৪ সালে ৪ হাজার ৮১৩ জন বাংলাদেশির মৃতদেহ দেশে এসেছে। এদের মধ্যে ৯৪.৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৩.৬ শতাংশ নারী কর্মী। সভায় রামরু’র ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে প্রবাসী কর্মীদের মৃত্যু কমাতে করণীয় নিয়ে সুপারিশ চাওয়া হয়েছে। আমরা আজকের সভা থেকে উঠে আসা সুপারিশগুলো সরকারের কাছে পাঠানো হবে।

তিনি বলেন, প্রবাসীদের মৃত্যুর ক্ষেত্রে লাশ পরিবহনে কিছু প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব, সেই জায়গা থেকে আমরা আলোচনা করতে চাচ্ছি। প্রবাসী কর্মীরা তাদের গন্তব্য দেশে মৃত্যুবরণ করছেন। আমরা ২০২২ সালে একটি গবেষণা করেছিলাম, তখন কিছু সুপারিশ করেছিলাম আমরা। এই যে মৃত্যুগুলো হচ্ছে, এগুলো কি সব স্বাভাবিক বা এরকমই হওয়ার কথা ছিল? যারা মারা যাচ্ছেন তাদের মৃত্যুর কারণগুলো কী। আমরা চাচ্ছি কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরতে, যাতে করে অপ্রত্যাশিত মৃত্যু কমিয়ে আনা যায়।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সচিব সেবাস্টিন রেমা বলেন, যেকোনও মৃত্যুই অনাকাঙ্ক্ষিত, তবে অভিবাসীদের মৃত্যু গভীরভাবে বেদনাদায়ক। এই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু রোধে বিষয়টি অভিবাসী গ্রহণকারী দেশগুলোসহ বিভিন্ন বহুপাক্ষিক ফোরামে তুলে ধরা যেতে পারে। মৃত্যু সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রোটোকলগুলো যেকোনও সমঝোতা স্মারকের মাঝে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, ড. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, শ্রমিকের অধিকার অনেকটাই বৈশ্বিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভরশীল হলেও দেশের ভেতরে আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের মাধ্যমে আমরা মৃত ব্যক্তির লাশ যথাযথ মর্যাদায় ব্যবস্থাপনা করতে পারি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত