ঢাকা শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বিএসইসি চেয়ারম্যান কমিশনারদের পদত্যাগ দাবিতে কর্মবিরতি শুরু আজ্ব

বিএসইসি চেয়ারম্যান কমিশনারদের পদত্যাগ দাবিতে কর্মবিরতি শুরু আজ্ব

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ্ব অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ্ব কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারের পদত্যাগের দাবিতে আজ্ব থেকে কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকাল বুধবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে এ কর্মবিরতির ঘোষণা দেন নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের কয়েক দফা দাবি কমিশনের সামনে উপস্থাপন করেন। কিন্তু সেসব দাবি-দাওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য কমিশনের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। এমনকি এসব দাবিদাওয়া নিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে কমিশনের পদত্যাগের এক দফা দাবির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ্বকের মধ্যে কমিশন পদত্যাগ না করলে কাল থেকে বিএসইসির সব শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মবিরতি পালন করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, মোহাম্মদ রেজাউল করিমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী। বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনারদের পদত্যাগ দাবিতে আজ্ব বেলা ১১টা থেকে ৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বিএসইসি ভবন অবরুদ্ধ করে রাখেন তাঁরা। গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পাহারায় বিএসইসির চেয়ারম্যান ও অন্য কমিশনাররা বিএসইসি ভবন ত্যাগ করেন। এ সময় তাদের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে তারা গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে পুরো পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর প্রতিবাদে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গতকাল এ কর্মসূচি পালন করছেন।

গত মঙ্গলবার বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এক আদেশে বাধ্যতামূলক অবসরের এ সিদ্ধান্ত জানান। বিএসইসিতে নতুন কর্তৃপক্ষ যোগ দেওয়ার পর সাইফুর রহমানকে ওএসডি করা হয়েছিল। এখন তাকে অবসরে পাঠানো হয়। বেলা ১১টার পর থেকে বিএসইসি ভবনে চেয়ারম্যান ও অন্য কমিশনারদের অবরুদ্ধ করেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বেলা দুইটা পর্যন্ত ভবনের গেট দিয়ে কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি। ভেতর থেকে কাউকে বের হতে দেননি কর্মসূচিতে অংশ নেয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বেলা দুইটার দিকে সেনাবাহিনীর একটি দল বিএসইসি কার্যালয়ের সামনে আসে। পরে ভেতরে প্রবেশ করে দলটি। পুলিশের একটি দলও সঙ্গে ছিল। পরে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় বিএসসির কার্যালয় থেকে বের হয়ে যান চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনাররা।

বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে সাইফুর রহমানকে কেন বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হলো, তার জ্ববাব চান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কেউ কেউ বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পতদ্যাগ দাবি করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, বর্তমান কমিশন নিয়ে বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেও হতাশা আছে। এর মধ্যে অন্যতম কারণ- কমিশনারদের খারাপ আচরণ ও ১২ কোম্পানির তদন্তের আলোকে শোকজ্ব করা। সব মিলিয়ে বাজে পরিস্থিতি বিরাজ্ব করছে বিএসইসিতে। গত মঙ্গলবার নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর আদেশ জারির পর পরিস্থিতি আরো খারাপ অবস্থায় চলে গেছে। তাই, বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর আদেশে উল্লেখ করা রয়েছে, যেহেতু বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানের চাকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে এবং যেহেতু কমিশন জ্বনস্বার্থে তাকে চাকরি থেকে অবসর দেয়া প্রয়োজ্বন মর্মে বিবেচনা করে, সেহেতু বিএসইসিরর কর্মচারী চাকরি বিধিমালা, ২০২১ এর ৬৩ বিধি এবং এতদণ্ডসংশ্লিষ্ট সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪৫ ধারার ক্ষমতাবলে গত সোমবার অনুষ্ঠিত ৯৪৫তম কমিশন সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে চাকরি হতে অবসর দেয়া হলো। তিনি বিধি অনুযায়ী অবসরজ্বনিত সুবিধা প্রাপ্য হবেন। এর আগে রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নিয়েই গত বছরের ২২ আগস্ট সাইফুর রহমানকে ইস্যুয়ার কোম্পানি অ্যাফেয়ার্স বিভাগ থেকে আরঅ্যান্ডডি বিভাগের দায়িত্ব দেয়। তখনই মূলত তাকে একপ্রকার ওএসডি করা হয়। তবে, ৯ সেপ্টেম্বর সেই দায়িত্ব থেকেও সরিয়ে দেয়া হয় তাকে। সেই থেকে সাইফুর রহমান নিয়মিত অফিসে এসেছেন; কিন্তু কোনো কাজ্ব করতে পারেননি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত