মানুষ মারার পরামর্শদাতারা কীভাবে সাংবাদিক হন- এমন প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, আওয়ামী শাসনামলে সাংবাদিকরা তেলবাজিতে মেতেছিল, ছিল না কোনো স্বাধীনতা। তেল দিতে দিতে মারাত্মক পর্যায়ে চলে গিয়েছিল, তারা মানুষ মেরে ফেলার পরামর্শ দিতেও কোনো দ্বিধাবোধ করেনি, তারা কীভাবে সাংবাদিক হন। এখনও কীভাবে তারা মিডিয়াতে কর্তৃত্ব বজায় রেখেছে। কারণ তাদের মূল প্রতিষ্ঠাতা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন। গতকাল সোমবার দুপুরে সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহীদুল ইসলাম।
এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘গণতন্ত্র-স্বাধীনতা ও আওয়ামী লীগ একসঙ্গে চলে না। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও আওয়ামী লীগ একসঙ্গে চলে না। কারণ তারা যতবারই রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়েছে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্রকে হরণ করেছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় কিছু সাংবাদিক মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করে না, ব্যক্তিগত ভাগ্য উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করেছে। এ কারণে কারো কারো ব্যাংক অ্যাকাউন্টে শত কোটি টাকা লেনদেন হয়। আবার দেশের বাইরে অনেকে বাড়ি করেছেন।’
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘৫০ বছর পরও কেন আমরা সংবাদপত্রের কালো দিবস নিয়ে আলোচনা করি। কারণ সংবাদপত্রের ইতিহাসে এমন দিন আর কখনও আসেনি। সেদিন রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তের আলোকে সংবাদপত্রের গলা চেপে ধরা হয়। সদ্য স্বাধীন হওয়া একটি দেশের সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে বেইমানি করে।’ এই সাংবাদিক নেতা বলেন, ‘স্বাধীনতার নামে যখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গুম, খুন, ব্যাংক লুটের ঘটনা ঘটাচ্ছিল, তখন তা পত্রিকায় আসার কারণে সব পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়। শেখ মুজিবুর রহমান গণমাধ্যমের প্রতি যে নিপীড়ন চালিয়েছেন সেটা দুনিয়ার ইতিহাসে আর কোথাও হয়নি। আমরা চাই একটি মানবিক দেশ, যেখানে কোনো গুম, খুন, হত্যা, মামলা নির্যাতন থাকবে না।’ জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ বলেন, ‘বাকশালের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকেও শেখ মুজিব বিলীন করে দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগকে মুক্ত করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। মিডিয়াকে অস্থিতিশীল করার জন্য দেশে এবং দেশের বাইরে চক্রান্ত চালানো হচ্ছে। সে কারণে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। মিডিয়াকে ফ্যাসিস্ট মুক্ত হয়, সেজন্য আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে।’ ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের পরিচালনায় এতে বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহিন, মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, নিউ নেশনের সাবেক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম মহসিন, বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব বাসির জামাল, ডিইউজের সহ-সভাপতি খন্দকার হাসনাত করিম পিন্টু ও রাশেদুল হক প্রমুখ।