চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনায় বিদেশি কোম্পানিকে যুক্ত করার পদক্ষেপ, রাখাইনের জন্য মানবিক করিডোরের উদ্যোগ বন্ধের দাবিতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে রোডমার্চ শুরু করেছে বিভিন্ন বামপন্থি, প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। গতকাল শুক্রবার সকালে ‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ’-এর ব্যানারে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে এই রোডমার্চ শুর হয়। এর আগে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে আসেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের প্রায় সবার হাতেই দেখা যায় প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার। রোডমার্চ পূর্ব সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর কোনো ভাবেই বিদেশিদের হাতে দেয়ার সুযোগ নেই। যেকোনো মূল্যে জাতীয় সম্পদ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে।’ আর রাখাইনে করিডোর দেয়ার উদ্যোগ দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর হুমকি। তাই দেশের জন্য এমন হুমকি প্রতিহত করা হবে। রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ৫০টার বেশি সংগঠনের নেতাকর্মীরা এই রোড মার্চে অংশ নিচ্ছেন। ঢাকা থেকে ছয় শতাধিক লোকজন রওনা করছি। পথে পথে আমাদের আরো অনেক লোকজন যুক্ত হবেন। প্রিন্স বলেন, নিউমুরিংসহ চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে পরিচালনা করতে হবে। রাখাইনে করিডোর দেওয়ার উদ্যোগ বন্ধ করতে হবে এবং জাতীয় সম্পদ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে বিগত সরকার এবং বর্তমান সরকারের যত গোপন চুক্তি আছে, তা প্রকাশ্যে আনতে হবে।
জানা গেছে, রোডমার্চটি নারায়ণগঞ্জ, সোনারগাঁ, চান্দিনা ও কুমিল্লার পথে নারায়ণগঞ্জ এবং কুমিল্লার বিভিন্ন পয়েন্টে পথসভা ও মিছিল হবে। আর কুমিল্লায় প্রথম দিনের সমাপনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। আজ শনিবার সকালে ফেনী থেকে যাত্রা শুরু করে মিরসরাই, সীতাকুণ্ডে পথসভা ও মিছিল এবং চট্টগ্রাম বন্দরের সামনে সমাপনী সমাবেশের মাধ্যমে রোডমার্চ শেষ হবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডমার্চ কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে এই দুই দিন দেশের সব জেলা-উপজেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে।
স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশকে ‘সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধচক্রে’ জড়ানোর চেষ্টা বন্ধের দাবিতে অর্ধশতাধিক সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের ছয় শতাধিক নেতাকর্মী এ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে। গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের শিল্পীরা ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু’, ‘জনতার সংগ্রাম চলবেই’ গানগুলো গেয়ে শোনান।
রোড মার্চ উদ্বোধনের সংক্ষিপ্ত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও গণমুক্তি ইউনিয়নের আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন নসু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, অধ্যাপক এম এম আকাশ, কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সাধারণ সম্পাদক হারুনার রশিদ ভূঁইয়া, বাংলাদেশের সোশালিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের সভাপতি মাসুদ খান, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিক ঐক্যের আহ্বায়ক মফিজুর রহমান লাল্টু। এছাড়া বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টসহ অনেক সংগঠন এ কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়েছে।