বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সামনে ব্যস্ত সূচি। চলতি এপ্রিলেই পাকিস্তানে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে শান্ত-মিরাজরা। তার আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতেও হবে একটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ। যেখানে খেলবে আরো দুই টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। আগামী বছরের বিশ্বকাপকে ভাবনায় রেখে টি-টোয়েন্টিতে ম্যাচ বাড়িয়েছে বাংলাদেশ। দুই সফরের জন্য গতকাল রোববার ১৬ সদস্যের টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু এ দল ঘোষণা করেন। দুই সিরিজেই বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন লিটন দাস।
দলে ডাক পেয়েছেন শরিফুল ইসলাম, তানভীর ইসলাম, নাজমুল হোসেন শান্ত, মোস্তাফিজুর রহমান, তাওহীদ হৃদয় ও নাহিদ রানা। অপরদিকে বাদ পড়েছেন আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, রিপন মন্ডল, নাসুম আহমেদ ও তাসকিন আহমেদ (ইনজুরি)। জানা গেছে, ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাকে। গত বছর বাংলাদেশ দলের তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের সবশেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে চোটের কারণে ছিলেন না শান্ত। ফলে ওই সিরিজে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন লিটন। তার নেতৃত্বে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ক্যারিবিয়ানদের হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের স্থায়ী অধিনায়ক কে হতে যাচ্ছেন, তা বেশ কিছুটা সময় ধরে জল্পনা-কল্পনা চলেছে। কেউ কেউ তাসকিন আহমেদকেও জাতীয় দলের পরবর্তী টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের দৌড়ে এগিয়ে রাখছিলেন। তবে গোড়ালির চোটের কারণে এখন মাঠের বাইরে অবস্থান করছেন এই পেসার। ইংল্যান্ড চিকিৎসা চলছে তার। তাই শেষ পর্যন্ত লিটনকেই পূর্ণ মেয়াদে টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক হিসেবে বেছে নিয়েছে বিসিবি। লিটনকে নেতৃত্ব দেওয়া প্রসঙ্গে ক্রিকেট অপারেশন্স বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিম বলেছেন, এবার দীর্ঘমেয়াদি চিন্তাভাবনা করেই আমরা অধিনায়কত্ব মঞ্জুর করেছি।
আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২৬ পর্যন্ত মার্চে যেটা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সেই বিশ্বকাপকে সামনে রেখেই লিটন কুমার দাসকে আমাদের জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব করা হয়েছে। লিটন দায়িত্ব পাওয়ায় তাকে শুভকামনা জানিয়েছেন সদ্য সাবেক অধিনায়ক শান্ত। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘অভিনন্দন লিটন ভাই। আশা করছি, আপনার নেতৃত্বে টি-টোয়েন্টিতে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বাংলাদেশ দল।’ আরব আমিরাত এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই সিরিজে লিটন দাসের ডেপুটি হিসেবে থাকবেন শেখ মেহেদী।
২০২৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে ভারতে। এই বৈশ্বিক আসর বিবেচনায় রেখে চলতি বছর সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপও ভারতে হবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। এই অবস্থায় নিজেদের বিশ ওভারের ক্রিকেটেই মনোযোগ দিতে চায় বাংলাদেশ। তাতে রাজি হয়েছে পাকিস্তানও। শুরুতে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলার কথা ছিল। পরবর্তীতে আলোচনায় দুই দল পাঁচটি টি-টোয়েন্টি খেলতে সম্মত হয় এবং জুলাইয়ে বাংলাদেশে এসে পাকিস্তান খেলবে আরো তিন টি-টোয়েন্টি। পাকিস্তানের ফয়সালাবাদ ও লাহোরে হবে পাঁচ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। ২৫ মে ফয়সালাবাদে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে। একই ভেন্যুতে ২৭ মে দ্বিতীয় ম্যাচ। শেষ তিনটি টি-টোয়েন্টি হবে লাহোরে। ৩০ মে, ১ ও ৩ জুন পর্যায়ক্রমে ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে।
পাকিস্তান সফরের আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। আগামী ১৭ ও ১৯ মে দুই ম্যাচের সিরিজটিতে লড়বে দুই দল। দুটি ম্যাচই হবে শারজাহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা) শুরু হবে ম্যাচ দুটি।
পাকিস্তান ও আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দল : লিটন কুমার দাস (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেন ইমন, সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয়, শামীম হোসেন, জাকের আলী অনিক, রিশাদ হোসেন, মাহেদী হাসান (সহ অধিনায়ক), তানভীর ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, তানজিম হাসান সাকিব, নাহিদ রানা ও শরিফুল ইসলাম।