মানিকগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী হরগজ গরুর হাটে ঈদকে সামনে রেখে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
সাটুরিয়া উপজেলার হরগজ ইউনিয়নে অবস্থিত এই হাটটি ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা ও তুলনামূলক কম হাসিলের কারণে পাইকার ও সাধারণ মানুষের কাছে একসময় অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। তবে বর্তমানে ঈদ উপলক্ষ্যে প্রতিটি পশু থেকে অতিরিক্ত ২০০ টাকা করে হাসিল আদায় করায় হাটের সুনাম যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি ক্রেতা-বিক্রেতারাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলার অন্যতম বৃহৎ এই গরুর হাটটি ১১ লাখ ৭৬ হাজার ৬৫০ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়। ‘হরগজ শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাহায্যার্থে’ লেখা রশিদ দিয়ে প্রতিটি পশু থেকে ৩০০ টাকা হাসিল নেওয়া হতো। তবে ঈদকে সামনে রেখে রবিবার থেকে থেকে সেই হার বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছে।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে পশু কিনতে আসা রাশেদ মিয়া জানান, তিনি ৪৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি ছোট ষাঁড় কিনেছেন এবং তার কাছ থেকে ৫০০ টাকা হাসিল নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “শুনেছিলাম এই হাটের হাসিল কম, কিন্তু আমার কাছ থেকে বেশি নিয়েছে।”
স্থানীয় ব্যাপারী মতিয়ার মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই হাট জেলার সবচেয়ে বড়। স্কুলের নাম ব্যবহার করার কারণে এর ইজারার মূল্য অন্যান্য হাটের চেয়ে কম। অথচ এখন ঈদ এলেই অতিরিক্ত হাসিল আদায় করা হচ্ছে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিগত সময়ে একটি প্রভাবশালী মহল এই হাটকে ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা বাণিজ্য করেছে। বর্তমানে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় একটি চক্র হাট পরিচালনার নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন।
হরগজ শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ বজলুর রহমান অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি পশু থেকে ৫০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এর আগে প্রতিটি পশু থেকে তিনশত টাকা হাসিল আদায় করা হত।
হরগজ শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. কামরুল হাসান হাট পরিচালনার সাথে তার যুক্ত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন আমি অল্প কয়েকমাস ধরে দায়িত্বে আছি। এসেই বলেছি হাটের কারণে স্কুলের স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হয়। হাটের দায়িত্ব ছেড়ে দিতে বলেছি।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ঈদকে সামনে রেখে হাসিলের টাকা বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।