সিরাজগঞ্জে এবার পাট (সোনালি আঁশ) চাষাবাদে বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষকেরা। ইতোমধ্যেই মাঠজুড়ে পাটের সবুজ সমারোহের সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষার শুরুতেই এ নতুন পাট বাজারে উঠবে। দাম ভালো থাকলে কৃষকেরা লাভবান হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কৃষকেরা বেশি চাষ করেছে। খরচের তুলনায় লাভ বেশি এ চাষে ঝুঁকে পড়েছে কৃষকেরা। নিচুু ও দো-আঁশ জমিতে এ পাট চাষ হয়ে থাকে এবং কৃষকেরা বিভিন্ন জাতের পাট বীজ সংগ্রহ করে বপন করেছে। বিশেষ করে ইরি বোরো ধান কাটার পরেও সেই জমিতে এ লাভজনক পাট চাষ করা হয়েছে এবং গত মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এ নামি পাট চাষ শেষ হয়েছে। এ জেলার চরাঞ্চলসহ কাজিপুর, শাহজাদপুর, রায়গঞ্জ, কামারখন্দ ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় বেশি এ পাট চাষ হয়েছে। এসব পাটের মধ্যে রয়েছে রবি ১, জেআরও ৫২৪ এবং দেশি ও তোষা ছাড়াও মেছড়া পাটও চাষাবাদ করা হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, প্রায় ৩ যুগ আগে এ জেলার বিভিন্ন স্থানে এ লাভজনক নানা জাতের পাট চাষ হতো। এসব পাট কাটা ও ধোয়া কাজে গ্রামাঞ্চলে হিড়িকও পড়তো এবং পাটের শোলায় খাল বিল ও নদী নালার ঘাটে স্তূপ করে রাখতো। এ চাষে খরচ বাদে লাভের অংকও ভালো ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন স্থানে জুটমিল বন্ধ হয়ে যায়। এতে ক্রমাগতভাবে পাটের কদর ও চাষাবাদ হ্রাস পায়।
তবে বিশিষ্টজনেরা বলছেন, ২০১৯ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্রমাগতভাবে বেশ কিছু জুটমিল পুনরায় চালু হতে থাকে। এজন্য পাটের চাহিদা ও দামও কিছুটা বাড়তে থাকে। সেইসাথে সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগের পরামর্শে আবারো এ পাট চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে ওঠে কৃষকেরা এবং সিরাগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাট চাষাবাদে প্রভাব বিস্তার ঘটছে। গত বছরের চেয়ে এবার সিরাজগঞ্জে পাট চাষাবাদ বেশি হয়েছে এবং দামও ভালো থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আঃ জাঃ মুঃ আহসান শহীদ সরকার আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, সংশ্লিষ্ট উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে বিভিন্ন জাতের এ পাট চাষ করেছে। খরচ কম লাভ বেশি হওয়ায় এ চাষ বাড়ছে। এবার এ চাষে বাম্পার ফলনেরও আশা করা হচ্ছে। মাঠ জুড়ে এ পাটের সবুজ সমারোহ সৃষ্টি হয়েছে। বাজারে দাম ভালো থাকলে কৃষকেরা এ চাষাবাদে আরো আগ্রহী হয়ে উঠবে এবং কৃষকদের এ চাষাবাদে নানা পরামর্শও দেয়া হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।