ঢাকা রোববার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

চাঁদপুরে আলুর আবাদ বেড়েছে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

চাঁদপুরে আলুর আবাদ বেড়েছে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

চাঁদপুরসহ সারা দেশে গত বছর জুড়ে আলুর বাজার দর ছিল অনেক বেশি। যার ফলে কৃষক, জমিরমালিক, ব্যবসায়ী সমাজ, দাদনদার ও মজুতদাররা প্রচুর লাভমান তথা প্রচুর অর্থ উপার্জন করে অনেক লাভ গুণেছেন। এতে করে বিগত বছরের তুলনায় এ বছর আলু চাষের প্রতি সবার ব্যাপক আগ্রহ পরিলক্ষিত হতে দেখা যায়। আলুর বাজার দর বাড়তি থাকার কারণে এ বছর দেখা যায়, চাঁদপুর জেলার ৮টি উপজেলার শত-শত কৃষকদের মধ্যে আলু আবাদে আগ্রহ বেড়েছে বলে লক্ষ্য করা গেছে। একই সঙ্গে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এখন পর্যন্তও দেখা যায় জমির অবস্থাও অনেক ভালো। জমিগুলোতে এখন চলছে ব্যাপক পরিচর্যা। কৃষি বিভাগ বলছে আবহাওয়া শেষ পর্যন্ত ভালো থাকলে আলুর ব্যাপক বাম্পার ফলন হওয়ার সম্বাবনা লক্ষ্য করা গেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয় থেকে জানাগেছে, জেলার ৮ উপজেলায় গত বছর আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ৫৯০ হেক্টর জমিতে। এ বছর আবাদ ব্যাপক বেড়ে হয়েছে ৮ হাজার ২ হেক্টর জমিতে আলু চাষ। সবচাইতে বেশি আবাদ হয়েছে জেলার দুই সেচ প্রকল্পের বাইরের এলাকাতে। এর মধ্যে মতলব দক্ষিণ ২ হাজার ৪৫০ হেক্টর, কচুয়া ২ হাজার ২৫ হেক্টর ও সদর উপজেলায় ১ হাজার ৭২ হেক্টর। সরেজমিন সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর, চান্দ্রা, বালিয়া, বাগাদি, আশিকাটি, শাহমাহমুদপুর, হাইমচর উপজেলার আলগী উত্তর ইউনিয়ন, মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদি দক্ষিণ ও পৌর এলাকায় দেখাগেছে অধিকাংশ জমিতে কৃষকরা আলুর জমিগুলোতে পরিচর্যার কাজ করে যাচ্ছে। আবার অনেকে কীটনাশক ছিটাচ্ছেন জমির চাষকৃত ফলনে যেন পোকামাকড় আক্রমণ করতে নাপারে। বিষ্ণপুর ইউনিয়নের দনপর্দি গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, প্রতিবছর শীত মৌসুমে আলু আবাদের পর নাবী দশা নামক রোগ দেখা দিয়ে থাকে। তবে এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও আমরা আগ থেকেই সর্তক রয়েছি। প্রতিটি আবাদি জমিতে কৃষক কীটনাশক দিয়ে যাচ্ছে। একই এলাকার কৃষক আলু চাষি সুরুজ মিয়া বলেন, তিনি এ বছর ৬০ শতাংশ জমিতে এবং তার ভাতিজা শরীফ মিজি দনপর্দি মাঠে ৩ একর জমিতে আলুর আবাদ করেছেন। তবে তাদের জমিতে এ বছর নিজস্ব বীজ লাগিয়েছেন।

কারণ মৌসুমের ওই সময়টাতে বীজের বক্স আলুর দাম কয়েকগুণ বেশি ছিলো। এখন পর্যন্ত তাদের জমির অবস্থা ভালো রয়েছে। আশিকাটি এলাকার কৃষক ছাত্তার মিয়া ও আফজাল হোসেন বলেন, এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় নির্ধারিত সময়ের আগেই জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে এবং ফলনও ভালো রয়েছে। আলুর বাজার দর ভালো থাকলে তারা লাভবান হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। সদর উপজেলার বালিয়া এলাকার কৃষক ইব্রাহিম খান বলেন, জানুয়ারি মাসে বাজারে আলু চলে এসেছে। তবে এসব আলু চাঁদপুরের নয়, মুন্সীগঞ্জ থেকে আমাদের বাজার দখল করেছে। প্রতি কেজি নতুন আলু ২৫ থেকে ৩০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আমাদের জমিগুলোর আলু উঠা পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে দাম অনেক ভালো পাওয়ার সম্ভাবনা করছি। চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর জেলায় লক্ষমাত্রার চাইতে প্রায় ৫শ’ হেক্টর জমিতে আলুর বেশি আবাদ হয়েছে। নাবী দশা নামক রোগের কারণে কৃষকরা উদ্বিগ্ন থাকলেও কৃষি বিভাগ তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ অব্যাহতভাবে রেখেছে। এখন পর্যন্ত জমির অবস্থা ভালো রয়েঠে। আশা করছি এ বছর আলুর বাম্পার ফলন হবে এবং কৃষক ভালো দামে আলু বিক্রি করে অনেক লাভবান হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত