শেরপুরে বনভোজনের বাসে থাকা এক মেয়েকে ইভটিজিং করায় যুবককে মারধরের জেরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, রাস্তা অবরোধ, আগুন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া ওই সংঘর্ষের জেরে গত শনিবার দুপুরেও সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের কান্দাশেরীরচর ও কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এতে প্রায় দেড় ঘণ্টা শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সংঘর্ষে দুপক্ষের অন্তত ১০ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলামসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের কান্দাশেরীরচর এলাকায় শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে সূর্যমুখীর বাগানে দর্শনার্থীদের ভিড়ে যানজট সৃষ্টি হয়। গত শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে যানজটে আটকে থাকা বনভোজনের বাসে বসে থাকা এক মেয়েকে ইভটিজিং করেন পার্শ্ববর্তী কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া গ্রামের এক যুবক।
পরে কান্দাশেরীরচর গ্রামের কয়েকজন যুবক মিলে ওই ইভটিজিংকারী যুবককে মারধর করেন। এর পর কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া গ্রামের লোকজন খবর পেয়ে দলবেঁধে কান্দাশেরীরচর গ্রামে হামলা চালালে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এতে কান্দাশেরীরচরের হোসেন আলীর ছেলে ফারুক মিয়া, লাল মিয়ার ছেলে মজনু মিয়া, ইয়াসিন আলীর ছেলে আব্দুল আলিমসহ অন্তত ৫ জন গুরুতর আহত হয়। এ সময় কুসুমহাটি বাজারের রাস্তায় আগুন দিয়ে অবরোধ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও পলাশ টেলিকম নামে একটি মোবাইলের দোকানে লুটপাটের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। এদিকে গত শনিবার সকাল থেকে কান্দাশেরীরচর ও কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া গ্রামের দুই পক্ষ কুসুমহাটি বাজারে শেরপুর-জামালপুর সড়কের দুইপাশে অবস্থান নেওয়া শুরু করলে আবারো পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। দুপুরের দিকে দুপক্ষের মধ্যে কয়েকবার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে দুপক্ষের অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় আবারো শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে লোকজন সরিয়ে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। তবে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাশেই গড়ে উঠা কৃষি পর্যটন সূর্যমুখীর বাগানে শনিবার থেকে দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
শেরপুর ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন নাহিয়ান ইসলাম জানান, খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। একই সঙ্গে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। সদর থানার ওসি জুবায়দুল আলম বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।