ফেনীর সোনাগজীর ফয়জুল বিল্লাহ পাপ্পু (৩০) নামে এক সার্বিয়া প্রবাসী যুবককে অপহরণ করে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতনের ভিডিও চিত্র পাঠানোর ২০ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে ওই যুবক।
তার পরিবারের সদস্যরা চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। অপহৃত পাপ্পু সোনাগাজী মোহাম্মদ ছাবের সরকারি পাইলট হাই স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক ছেরাজুল হকের বড় ছেলে। উন্নত জীবনের স্বপ্ন নিয়ে পাঁচ বছর পূর্বে সার্বিয়া যান পাপ্পু। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন ভয়াবহ এক দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে তার। ছেরাজুল হক ও তার স্ত্রী আয়েশা বেগম তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
তারা জানান, গত ১৪ জুন রাত ৮টা ৪৯ মিনিটে একটি অচেনা নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে কল আসে। ভিডিওতে দেখা যায়, ছেলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম। সেইসঙ্গে বাংলাদেশি প্রায় দুই কোটি ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে পাঠানো হয় বাংলাদেশের আটটি ব্যাংক ও মোবাইল নম্বর। তিন দিনের মধ্যে টাকা না দিলে ছেলেকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেন অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। কয়েক দফা ভিডিও কলে পাপ্পুকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে সেই দৃশ্য ও শব্দ পরিবারের সদস্যদের দেখানো হয়। এরই মধ্যে গত ১৭ জুন রাত ১টা ১৫ মিনিটে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি ফোনে জানায়, ‘নির্যাতন সইতে না পেরে পাপ্পু বসনিয়ার একটি হাসপাতালে হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছে।’ তবে এ বিষয়ে কোনো সরকারি নিশ্চয়তা বা প্রমাণ পায়নি পরিবার। ঘটনার পর গত ১৬ জুন তার মা বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২ অনুযায়ী একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুর গ্রামের মো. ইব্রাহীমকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। পাপ্পুর মা আরও বলেন, আমার ছেলেকে বাঁচান। যেভাবেই হোক, তাকে দেশে ফিরিয়ে আনুন। তার মৃত্যু হলেও যেন অন্তত জানাজা পড়াতে পারি। সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো. বায়েজীদ আকন বলেন, একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপরাধীদের দেওয়া ব্যাংক একাউন্ট গুলো চিহ্নিত করতে আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছে। আদালতের আদেশ পেলে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপরাধীদের চিহ্নত করা সহজ হবে।